চোখ উঠলে যা করনীয়,লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত
বর্তমানে ছোট থেকে বড় সকলের চোখ ওঠা রোগ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমরা জানি না চোখ
উঠলে কি করা উচিত বা কেন চোখ উঠে। নিচে আলোকপাত করা হবে,চোখ উঠলে করনীয়
লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত। চোখ ওঠা রোগ সাধারণত এমনিতেই ভালো হয়ে
যায়।পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে,সুষম খাবার,বিশেষত ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ও
পর্যাপ্ত পানি পান করলে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
আমরা আজকে আলোকপাত করব চোখ উঠলে করনীয় লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে। চোখ উঠলে
প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ড্রপ ব্যবহার করা
শুরু করতে হবে। তবে ভুলেও স্টেরয়েড ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চোখ উঠলে করণীয় লক্ষণ ও প্রতিকার
- চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করব
- চোখ ওঠার কারণ
- চোখ ওঠা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
- চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার
- বাচ্চাদের চোখ উঠলে করনীয়
- চোখ ওঠা ছোঁয়াচে কিনা
- চোখ উঠার দোয়া
চোখ উঠলে কোন ড্রপ ব্যবহার করব
চোখ উঠলে দিনে তিনবার অথবা 4 বার চোখের এন্টিবায়োটিক
ড্রপ ক্লোরামফেনিকল ব্যবহার করতে হবে।ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ না হলেও
সেকেন্ডারি ইনফেকশন প্রতিরোধ করার জন্য এটি ব্যবহার করা যায়।চোখে চুলকানি
থাকলে এন্টিহিস্টামিন সেবন করতে হবে।এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে
হবে।
চোখ ওঠার কারণ
এলার্জির কারণে চোখ ওঠা রোগ হতে পারে। সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে
চোখ ওঠা রোগ হয়।বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে সে সময়ে বেশি হয় সাধারণত
কন্টাক্টর মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। চোখ ওঠা হতে পারে ব্যাকটেরিয়া
দিয়ে।অপরিষ্কার নোংরা জীবনযাপন চোখ উঠার অন্যতম কারণ।
চোখ ওঠা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করে অতি সহজে চোখ ওটা সমস্যা দূর করা সম্ভব।পেয়ারা
পাতার রয়েছে জীবাণু ধ্বংস করার ক্ষমতা।প্রাকৃতিক ঔষধ এর ক্ষমতা
যুক্ত এই পাতাকে শুকনো তাও আইনের একটি নরম কাপড়ে জড়িয়ে ধরে থাকুন
চোখের উপরে। দিনে তিন-চারবার এমন করলে আরাম তো মিলবেই বরঞ্চ চোখ ওঠা থেকে
দূরে রাখবে। আবার তাও বা চাট গরম করে পরিষ্কার শুকনো কাপড়ে সেই তাপ নিন।
দিনে কয়েকবার এই তাপ দিলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মরে যাবে।
চোখ ওঠার লক্ষণ ও প্রতিকার
লক্ষণঃ
- চোখ দিয়ে পানি পড়ে
- চোখের পাতা ফুলে যায়
- চোখ লাল হয়ে যায়, সাধারণত প্রথমে এক চোখ লাল হয় পরে দুই চোখে হয়
- চোখ খচখচ করে
- আলো সহ্য হয় না
- ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা লেগে থাকে
- চোখ উঠলে চোখে ঝাপসা দেখেন
প্রতিকারঃ
- হাত দিয়ে চোখ চুলকানো যাবেনা
- কালো চশমা পড়তে হবে
- মানুষজন এড়িয়ে চলতে হবে
- চোখ ওঠা রোগীদের আলাদা থাকতে হবে
- সাধারণত এ রোগ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়
- অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে
- চক্ষু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রপ ব্যবহার করতে হবে
বাচ্চাদের চোখ উঠলে করনীয়
বাচ্চাদের চোখ উঠলে সব ওষুধ বা ড্রপ ব্যবহার করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে তুলা
ভিজিয়ে শিশুর চোখ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে শিশুদের ঘরের
বাইরে যেতে না দেওয়াই ভালো। অবশ্যই শিশুর চোখ নিয়মিত পরিষ্কার করে
দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শিশু চোখে যেন বারবার হাত না দেয়।
যে কাজ গুলো আমাদের অবশ্যই করণীয় যে বাচ্চার চোখ উঠবে তার চোখে বারবার যেন
পানি দেওয়া না হয়। টিস্যু পেপার একবার ব্যবহার করার পর তা ফেলে দিতে হবে।
শিশুর চোখে কোন ধরনের কাজল বা কিছু ব্যবহার করা যাবে না। শিশুর হাত সব
সময় পরিষ্কার রাখতে হবে পাশাপাশি শিশুর চোখ ভালো রাখতে পুষ্টিকর খাবার
খাওয়াতে হবে।
চোখ ওঠা ছোঁয়াচে কিনা
চোখ ওঠা খুবই মারাত্মক একটি ছোঁয়াচে রোগ। আমেরিকান অ্যাক্যাডেমি অব
অপথ্যালমোলজির তথ্য বলেছে এ রোগের ভাইরাস হাসি কাশির মাধ্যমেও ছড়াতে
পারে। চোখ ওঠা রোগির ব্যবহার করা রুমাল তোয়ালে বা বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে
তারা আক্রান্ত হতে পারে। তবে চোখ ওঠা রোগের চোখের দিকে তাকালে এটি ছড়িয়ে
পড়বে না।আমেরিকান অ্যাক্যাডেমি অব অপথ্যালমোলজি বলেছেন জীবাণু আলোক রশ্মির
সাহায্যে এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তি পর্যন্ত পৌছাতে পারেনা।ভাইরাসটি
সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে মাধ্যমে ছড়ায়।
চোখ উঠার দোয়া
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাদানি,আল্লাহুম্মা আ-ফিনি
সাম-ই,আল্লাহুম্মা আ-ফিনি ফি বাসারি,লা-ইলাহা ইল্লা আনতা।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার দেহ সুস্থ রাখুন। হে আল্লাহ!আমাকে সুস্থ রাখুন আমার
শ্রবণ ইন্দ্রিয়ে। হে আল্লাহ!আমাকে সুস্থ রাখুন আমার দৃষ্টিশক্তিতে। আপনি
ছাড়া কোন উপাস্য নেই।