চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় - অতিরিক্ত চুল পড়ার সমাধান
আপনি যদি অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন তবে এই পর্বটি আপনার
জন্য। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ - চুল
পড়ার ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে। অনেকেই চুল পড়ার কারণে দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকে।
কারণ চুল পড়া একটি বড় ধরনের সমস্যা। একবার চুল পড়া শুরু হলে আর কিছুতেই থামে
না। আপনি যদি চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে জানতে চান তবে এই পর্বটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন। অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ - চুল পড়ার
ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
আপনি কি অতিরিক্ত চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন? আপনি যদি চুল পড়ার কারণ
নিয়ে দুশ্চিন্তা করে থাকেন তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। কারণ এই পর্বের মাধ্যমে
আপনি জানতে পারবেন অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ - চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান
সম্পর্কে। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ -
চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান।
পোস্ট সূচীপত্রঃ অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ - চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ
আপনি যদি অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ কি জানতে চান তবে এই পর্বটি আপনার জন্য।
অনেকেই জানে না অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ কি বা কি কারণে অতিরিক্ত চুল পড়ে
যাচ্ছে। তাই এ সকল প্রশ্নের জবাব নিয়ে এসেছে আপনাদের জন্য। চলুন জেনে নেওয়া
যাক কি কারনে অতিরিক্ত চুল ঝরে পড়ছে। বিভিন্ন কারণের চুল পড়া বাড়তে
থাকে। কম বেশি প্রায় সবাই চুল পড়ায় ভোগেন । অনেকের আবার বয়স থাকতেই মাথা
খালি হয়ে যায়। কখনো কখনো পূর্ববর্তী প্রজন্মের চুল পড়ার সমস্যা থাকলে
পরবর্তী প্রজন্মেও এই সমস্যা দেখা দেয়। আবার অযত্নের ফলেও অনেক সময় অতিরিক্ত
চুল পড়ে থাকে। স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত চুল পড়লে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের
শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। নিম্নে অতিরিক্ত চুল পড়ার কয়েকটি কারণ জেনে নিই।
- দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ
- বংশানুক্রমিক(পুরুষদের ক্ষেত্রে)
- এলোপেশিয়া এরিয়াটা(অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার)
- থাইরয়েড হরমোনের অস্বাভাবিকতা
- সরিয়াসিক বা ক্রনিক পেট খারাপ
- অপুষ্টি
- হঠাৎ মানসিক আঘাত
- শারীরিক খাদ্য উপাদানের ঘাটতি
- সংক্রমণ বা জ্বর
- মাথায় উকুনের উপদ্রব
- ক্যান্সার কিংবা কেমোথেরাপির পর
- প্রসব পরবর্তী সময়ে
- রাত জাগার কারণে
- খুশকি কিংবা মাথার ত্বকের কোন রোগ
- হরমোন জনিত কোন সমস্যা
- চুলে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার। ইত্যাদি কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে।
চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণে এক সময় আমাদের মাথায় আর কোন চুল থাকে না। আবার অনেক
সময় অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণে আমরা বাইরে কারো সম্মুখে যেতে পারি না। তাই
আপনার যদি মাথার চুল পড়ে যায় তবে ঘরোয়া উপায়ে আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে
পারবেন। এই পর্বের মাধ্যমে চলুন জেনে নেওয়া যাক চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান।
নিম্নে চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান দেওয়া হলোঃ
- তেলঃ মাথার ত্বকে যদি রক্ত সঞ্চালন কম থাকে তাহলে অনেক সময় চুল পড়ে থাকে। তাই মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে তেল ব্যবহারের বিকল্প নেই। আপনার মাথার মানানসই তেল সপ্তাহে অন্তত ২ বার ব্যবহার করুন। মাথার ত্বকে তেল দিয়ে আঙুল দিয়ে হালকা ম্যাসাজ করলে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এতে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুল পড়া অনেকাংশে কমে যায়। আপনি চাইলে তেল ব্যবহারের ২ ঘন্টা পরে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। তবে কখনোই একদিনের বেশি মাথায় তেল রাখবেন না, এতে মাথার ত্বকে ময়লা জমার সম্ভাবনা থাকে। ফলে চুল পড়া কমানোর চেয়ে বাড়িয়ে দিতে পারে।
- অর্গানিক নারকেল তেলঃ নারিকেলে উপস্থিত ফ্যাট আমাদের চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং স্বাস্থ্যকর ভাবে ঝলমলে করে তুলে। নিয়মিত নারকেলের তেল বা নারকেলের দুধ মাথার ত্বকে মাসাজ করলে, ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ফলে চুল বৃদ্ধি পায় এবং চুল পড়া রোধ করে । তবে হালকা হাতে মালিশ করতে হবে, কেননা খুব জোরে মালিশ করলে চুল পড়ার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যাবে। সপ্তাহে অন্তত ১ দিন এই প্রক্রিয়ায় মাথায় তেল দিন। কিছুদিনের মধ্যেই আপনি ফলাফল পেয়ে যাবেন।
- নারকেলের দুধঃ নারিকেলের দুধের রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন ও পটাশিয়াম।প্রথমে একটি নারিকেল নিন, এবার নারিকেল টা করে কিংবা বেটে গরম জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন । এরপর থাকনা দিয়েছে কে নারিকেল করা থেকে এর দুধ বের করে নিন। এরপর এই দুধ মাথায় লাগিয়ে আধাঘন্টা অপেক্ষা করুন। তারপরে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন, আপনি চাইলে হালকা করে শ্যাম্পু ইউজ করতে পারেন। নারকেলের দুধ চুলের স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করতে অতি প্রয়োজনীয়। সপ্তাহে ১ দিন করলেই হবে।
- অ্যালোভেরাঃ রূপচর্চায় এলোভেরার জুড়ি মেলা ভার। এটি মাথার ত্বকের অম্লটা বা পিএইচ সমতা করে। এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। প্রথমে চুল ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর একটি এলোভেরা পাতার শাঁস বের করে নিন। এবার সেই শ্বাস চুলের গায়ে এবং মাথার ত্বকে মালিশ করে লাগান। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন চুলে এলোভেরা লাগালে ভালো হয়, তবে আপনি আপনার সময় এবং সুবিধা অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন।
- দইঃ অতিরিক্ত শ্যাম্পো করার ফলে আমাদের চুলের আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। টক দই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের চুল এবং মাথার স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। তাই চুলের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে এবং প্রোটিন ও ভিটামিন বি এর কার্যকারিতা বাড়াতে দই একটি আদর্শ উপাদান। গোসলের আধা ঘন্টা আগে চুলের গায়ে প্যাক হিসেবে শুধুমাত্র টক দই কিংবা তার সাথে লেবু কিংবা মধু মিশিয়ে প্যাক হিসেবে ও ব্যবহার করতে পারেন। এতে অনেক উপকার পাবেন। কিছুক্ষণ রেখে চুল শুকিয়ে নিন এবং তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করুন আর দেখুন এর জাদুকরী কাজ। এটি আপনার চুল পড়া কমাতে এবং ভূমিকা পালন করে।
- মেথিঃ চুলের সমস্যায় মেথির ব্যবহার কমবেশি অনেকেই জানেন। চুলের বৃদ্ধির জন্য মেথি অত্যাবশ্যক। আগের দিন মেথি ভিজিয়ে রাখুন, পরের দিন সকালে মেথির পেস্ট বানিয়ে নিন। এটি সরাসরি প্যাক হিসেবে চুলে লাগাতে পারেন কিংবা দই ও মধুর সঙ্গে মিশিয়েও লাগাতে পারেন। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। অথবা শুকনা মেথি গুঁড়ো করে তেলের সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন এতে অনেক উপকার পাবেন।
- নিমপাতাঃ আমরা অনেকেই নিম পাতার ঔষধি গুন সম্পর্কে জানি। মাথার ত্বকে খুশকি কিংবা ইনফেকশনের সমস্যা থাকলে নিম পাতার প্রভাবে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এবং এতে চুলের বৃদ্ধি বেড়ে যাবে। এক লিটার পানিতে একমুঠো নিম পাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন । এবং এই মিশ্রণটি সম্পূর্ণ ঠান্ডা করে একটি পরিষ্কার পাত্রে ভরে রাখুন। শ্যাম্পু করার পর এই জলে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে অন্তত একবার এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন।
- মধুঃ মধু একটি প্রাকৃতিক খাবার। এটি কখনোই নষ্ট হয় না। এতে রয়েছে অনেক গুণ। এটি মাথার ত্বকের মাথার ত্বকের পি এইচ এর সমতা বজায় রাখে। এটি আপনি মেথি কিংবা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক হিসেবে মাথাই লাগাতে পারেন। এটি চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আবশ্যক।
- লেবুর রসঃ লেবু মাথার ত্বকের ব্যাকটেরিয়া নির্মলে এবং ত্বকের অম্লতা সমতা করতে অনেক সাহায্য করে। এটি চুল পড়া রোধেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। আপনি চাইলে গোসলের কিছুক্ষণ আগে মাথার ত্বকে ঘষে ঘষে ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা মেথি, পেঁয়াজ,দই কিংবা মধুর সাথে মিশিয়ে প্যাক হিসেবেও মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। অথবা শ্যাম্পুর সময় পেঁয়াজ ও লেবুর রস শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে শ্যাম্পু করলে এটি চুলে কন্ডিশনার এর মতো কাজ করে। এবং চুলকে করে তোলে সিল্কি , ঝকঝকে এবং আরো উজ্জ্বল।
- ডিমঃ ডিম চুলের ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যেটি চুলের স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এবং চুলকে মজবুত করতেও সাহায্য করে।ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি ফাইভ বা বায়োটিন যা মাথার ত্বককে সুস্থ রাখে।
অতিরিক্ত চুল পড়লে করণীয়
আপনি কি জানেন অতিরিক্ত চুল পড়লে করণীয় কি? অনেকেই জানেনা অতিরিক্ত চুল পড়লে
কি করতে হবে। আপনিও যদি একই সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে
পড়ুন। এই পর্বের মাধ্যমে চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত চুল পড়লে করণীয়
কি।
আরো পড়ুনঃ মাসিক হলে করণীয় - মাসিক হলে কি করা উচিত
- স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য অভ্যাস গড়ে তোলা
- প্রোটিন, ভিটামিন,খনিজ পদার্থ এবং কমেগা থ্রি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
- ক্ষতিকর UV রশ্নি থেকে চুলকে বাঁচিয়ে রাখা
- চুলে সঠিক পণ্য ব্যবহার করা
- অতিরিক্ত টাইট করে চুল না বাধা
- ভেজা অবস্থায় চুল না আচড়ানো
- মেডিসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার জন্য চুল পড়ছে কিনা তা নিশ্চিত করা
- চুলে অতিরিক্ত হিট না দেওয়া
- কেমিক্যাল এর ব্যবহার না করা
- চুলে যথাসম্ভব প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা।
চুল পড়া কমানোর ঔষধ
আপনি যদি চুল বাড়াও কমানোর ঔষধ সম্পর্কে জানতে চান তবে এই পর্বটি সম্পূর্ণ
মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই জানতে পারবেন কোন ওষুধ
সেবন করলে চুল পড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক চুল
পড়া কমানোর জন্য কোন ওষুধ সব থেকে ভালো।বংশানুগত ভাবে কিংবা বয়সের কারণে চুল পড়ে যায় বা টাক হয়ে যায়। এটি
সাধারণত স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে চুল পড়া রোধে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ বাজারে
পাওয়া যায়।
- মনক্সিডিলঃ এটি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে চুল পড়ার হার অনেকাংশে কমে যায় । এবং নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে । এটি বাজারে ফ্রম স্প্রে কিংবা ক্রিম আকারে পাওয়া যায় । নারী কিংবা পুরুষ সবাই এটি ব্যবহার করতে পারেন।
- ফিনেস্টেরাইডঃ এটি সাধারণত পুরুষরা ব্যবহার করতে পারবেন। এটি পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন এর ওপর কাজ করে। এটি টেস্টোস্টেরন থেকে ডিএইচটি বাই প্রোডাক্ট হতে বাধা সৃষ্টি করে। তবে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে।
- পি আর পিঃ প্লাটিলেট হলো একটি সহযোগী পদ্ধতি। তবে এটি চুল পড়ার একমাত্র বা নির্দিষ্ট চিকিৎসা নয়, এটি অন্য চিকিৎসাগুলোকে সাহায্য করে। তাই পি আর পি করলেই যে সম্পূর্ণ চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে এটা ভাবা ভুল। তবে চুল পড়া কমাতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
- প্রতিস্থাপনঃ যখন চুলের গোড়া বা হেয়ার ফলিকল নষ্ট হয়ে যায়। মাথায় টাক পড়ে যায় সে ক্ষেত্রে চুল প্রতিস্থাপন কিংবা হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়া আর কোন সমাধান নেই। তবে প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে মাথার পেছনের চুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মাথায় কতখানি চুল অক্ষত আছে সেটা এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি দু ধরনের পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- ফলিকোলার ইউনিট এক্সট্রাকশন
- ফলিকুলার ইউনিট ট্রান্সপ্লান্ট
ছেলেদের চুল পড়ার কারণ কি
অনেক ছেলেদের মাথার চুল পড়ার কারণে মাথার উপরে টাক হয়ে যায়। ছেলেদের চুল
পড়া অনেক বড় ধরনের একটি সমস্যা। চুল পড়ার কারণে অনেক সময় আমাদের কোথাও
যেতেও দ্বিধাবোধ সৃষ্টি হয়। তাই এই পর্বের মাধ্যমে জেনে নিন ছেলেদের চুল পড়ার
কারণ কি অথবা ছেলেদের চুল পড়ে কেন। নিম্নে ছেলেদের চুল পড়ার কারণ দেওয়া
হলোঃ
- জেনেটিক্যাল বা বংশগত কারণঃ পূর্বপুরুষদের কারো চুল পড়া বাক সমস্যা থাকলে উত্তরাধিকার সূত্রে আপনিও এই সমস্যা পেয়ে যেতে পারেন। তাই আপনার টাক সমস্যার পিছনে যে জেনেটিক্যাল কারণ রয়েছে এটা আপনাকে বুঝতে হবে। এবং অযথা বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- হরমোন জনিত সমস্যাঃ পুরুষদের এন্ড্রোজেনিক হরমোন (পিএইচটি, টেস্টোস্টেরন) এজাতীয় হরমোন গুলো নারীদের তুলনায় পুরুষদের বেশি থাকে। এগুলো হেয়ার ফলিকল কে বিশেষভাবে ত্বরান্বিত করে এবং চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়। সে কারণেই নারীদের তুলনায় পুরুষদের বেশি চুল পড়ে। যে সমস্ত পুরুষদের এ হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকে তাদের বেশি বেশি চুল পড়ে। তবে 20 বছর থেকেই পুরুষদের চুল পড়া বা টাক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এটিকে সাধারণত মেল প্যাটার্ন অফ হেয়ার লস বা পুরুষালী টাক বলা হয়। কপাল থেকে শুরু করে মাথার পেছনদিকে চুল উঠে যেতে থাকে।
- মানসিক চাপঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপ কিংবা দুশ্চিন্তায় ভুগলে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। তবে এটি টাক সমস্যা নয়, এ চুল পড়ার সাময়িক এবং পুনরায় চুল গজায়। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত মানসিক দুশ্চিন্তায় থাকলে, অনেক বেশি চুল পড়ে যেতে পারে।
- স্বাস্থ্যগত সমস্যাঃ শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাবেও চুল পড়তে থাকে। এবং শরীরে কোন রোগ থাকলে তার প্রভাবেও অনেক সময় প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে থাকে। যেমন ক্যান্সারের সময় কেমোথেরাপির পরে সমস্ত চুল পড়ে যায়।
- মাদকাসক্তিঃ মাদকদ্রব্য যেমন আমাদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর তেমনি আমাদের চুলের জন্য ক্ষতিকর। ড্রাগ , অ্যালকোহল এবং মাদক এগুলো আমাদের অতি মূল্যবান চুলকে ঝরিয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এতে স্বাস্থ্যগত অনেক ঝুঁকিও রয়েছে। তাই আমাদের এসব থেকে দূরে থাকা উচিত।
- খুশকিঃ চুল পড়া বিষয়ে প্রত্যাখ্য্য কারণ হলো খুশকি। যদি আপনার চর্মরোগ বা অ্যালার্জি থেকে থাকে তবে এটি আরো বেশি বাড়িয়ে দেয়। তাই সব সময় মাথা পরিষ্কার রাখুন এবং খুশকি থেকে বেঁচে থাকুন।
চুলের আগা/মাথা ফেটে যাওয়ার কারণ কি
আপনি কি চুলের আগা বা মাথা ফেটে যাওয়ার কারণ জানেন? যদি না জেনে থাকেন তবে এই
পর্বটি আপনার জন্য। অনেকের রয়েছে যাদের অনেক বড় বড় চুল হয় চুলের আগা বা
মাথা ফেটে যায়। তাই চলুন এই পর্বের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক চুলের আগা ফেটে
যাওয়ার কারণ কি।
- চুলে পুষ্টির অভাব
- রুক্ষতা
- ময়লা
- নিয়মিত চুল না কাটা
- অতিরিক্ত চুল আচড়ানো
- সুষম খাদ্য অভ্যাস না থাকা
চুল পড়ার সময় কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত-চুল পড়া কমাতে কি খাবেন
আপনার যদি চুল পড়ে থাকে তাহলে আপনার অবশ্যই জানার প্রয়োজন চুল পড়া কমাতে
কি খাওয়া উচিত। চুল পড়া আমাদের অনেক বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। যেটা
কোন ভাবেই ঠেকানো সম্ভব হয় না। তবে আমাদের খাবারের মাধ্যমেও চুল পড়া কমানো
যেতে পারে। তাই এই পর্বের মাধ্যমে জেনে নিন চুল পড়া কমানোর জন্য কি খাওয়া
প্রয়োজন। চুল পড়া কমাতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার
খাওয়া উচিত। সাধারণত প্রোটিনের অভাবেই অতিরিক্ত চুল পড়ে থাকে।
- সবুজ শাকসবজি-সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ফাইভ বায়োটিন যা চুলের জন্য অত্যন্ত জরুরী। প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খেলে চুল পড়া অনেকাংশের হ্রাস পায়।
- সামুদ্রিক মাছ-সামুদ্রিক মাছের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা মাথার ত্বকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- কাঠবাদাম-কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং বায়োটিন। প্রতিদিন নিয়মমাফিক কাঠবাদাম খেলে চুল ঘন হয়।
- ওটস-এতে রয়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণে জিংক ফাইবার এবং ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসি ড ও ভিটামিন বি যা চুল পড়া রোধ করে এবং টাক সমস্যা আটকায়।
- আখরোট-আখরোতে রয়েছে ভিটামিন বি 7 এবং ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলের গোড়া মজবুত করে। চুল পড়া কমায় এবং চুলের ফলিকল কে আটকে রাখে। এর পাশাপাশি মাথার স্কাল্পে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।
- ডিম-ডিম রয়েছে বায়োটিন বা ভিটামিন বি সেভেন অত্যন্ত কার্যকরী। এটি চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবেই কাজ করে। বিশেষ করে যাদের মাথায় টাক পড়া সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত খাবারের তালিকায় ডিমের সঙ্গে দুধ জাতীয় খাবার রাখুন। এ সমস্ত খাবারে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন বি ১২, প্রোটিন , ওমেগা 6, জিংক, আয়রন ও ফ্যাটি আসিড রয়েছে যা টাক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- দুধ বা দুধ দব্য-দুধ একটি আদর্শ খাবার। দুধে রয়েছে সমস্ত পোকার খাদ্য উপাদান । দুধ আমাদের স্বার্থ সুন্দর রাখতে খুবই উপকারী। যেমন দই পনির ইত্যাদি - এগুলো তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৭ যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। যাদের টাক পড়া শুরু হয়েছে তারা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় দুধ বা দুধ চাচ দ্রব্য রাখতে পারেন এটি আপনার মাথায় টাক পড়তে বাধা দিবে।
- ঘুম -অনেক সময় অনিয়মিত ঘুম এর কারণেও শরীরে অনেক রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই নিয়ম মাফিক ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে জেগে উঠুন। তাহলে সুস্থ থাকবেন ।
- ব্যায়াম বা শরীরচর্চা-নিয়মিত স্বাভাবিক ব্যায়ামগুলো আপনার শরীরকে সুস্থ এবং সতেজ রাখে। এবং আপনাকে সব দিক থেকে প্রাণবন্ত করে রাখে। নিয়মিত ব্যায়াম করুন তাহলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং আপনার রক্ত চলাচল ও ঠিক থাকবে।
শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনি আপনার সমস্যা সমাধান বের করতে
পেরেছেন। আপনার যদি অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ - চুল পড়ার ঘরোয়া সমাধান
সম্পর্কে কোন মন্তব্য থেকে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আজকের
পর্বটি যদি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ।