ডায়াবেটিস এর লক্ষন - দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি - ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি জানতে
চান তাহলে এই পর্বটি আপনার জন্য। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই জানতে
পারবেন ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি - ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি।
বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি প্রায় সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে।
তাই আমাদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরী। তাই এই পর্বের মাধ্যমে জেনে
নিন ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি - ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি।
বর্তমানে ডায়াবেটিস সমস্যা প্রায় সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আমাদের
ডায়াবেটিক সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ডায়াবেটিস যার হয় শুধু তার সমস্যা
নয় বরং তারপরের প্রজন্মেরও ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই অবশ্যই
আমাদের ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি - ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি নিচে দেওয়া হলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি - ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি
- ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
- ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি
- ডায়াবেটিস কি-Onuperona It
- বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস কত তারিখ-Onuperona It
- ডায়াবেটিস রোগ কেন হয়-ডায়াবেটিস রোগের কারণ
- ডায়াবেটিস রোগের ধরন-ডায়াবেটিস কত প্রকার
- ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পদ্ধতি-ডায়াবেটিস শনাক্তের পরীক্ষা
- ডায়াবেটিস রোগের কারণ
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
- ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধের উপায়
- ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়
- ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পেতে যে খাবারগুলো গ্রহণ করা উচিত
- ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ১০ উপায়
- শেষ কথা
ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগীর লক্ষণ গুলো কি জানতে চান তাহলে এই পর্বটি আপনার জন্য।
এই পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ কোনগুলো। তাহলে চলুন
জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি। ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ
দেওয়া হলো।
- ঘন ঘন প্রস্রাব। ডায়াবেটিস রোগের প্রধান ও অন্যতম একটি লক্ষণ হল ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। যেহেতু শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় যার ফলে কিডনিতে প্রচুর পরিমাণে চাপ পড়ে এবং অতিরিক্ত প্রসাব হয়।
- শরীর অতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়া এবং একটুতেই হাপিয়ে ওঠা এটি ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ।
- চামড়া ফেটে যাওয়া।
- ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়া।
- ত্বকে বিভিন্ন প্রকার সংক্রমণ দেখা দেওয়া।
- দৃষ্টিশক্তি এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া। এবং ঝিম ধরা ভাব।
- মাত্রাতিরিক্ত ওজন হ্রাস। এ রোগ দেখা দিলে সাধারণ ব্যায়াম কিংবা ডায়েট না করলেও অতিরিক্ত ওজন হ্রাস হয়ে যায়।
- বারবার ক্ষুধা লাগা বা পিপাসা লাগা। এ রোগের অন্যতম আরেকটি লক্ষণ হল ঘন ঘন ক্ষুধা এবং অতিরিক্ত পিপাসা লাগা যেন গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়। এবং কিছুক্ষণ পরপর খাবার না খেলে বিভিন্ন রকম শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে থাকে।
- শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচুর পরিমাণে কমে যায়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে থাকেন।
- বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
- চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়া এবং চুলকানি ভাব
- খিটখিটে ও বিরক্তিকর মেজাজ হয়ে ওঠা
- মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
- সময় মত খাবার না খেলে রক্তের শর্করার লেভেল কমে যাওয়া এবং হাইপো হওয়া
- এবং কোথাও কেটে গেলে সহজে ঘা শুকাতে চায় না।ইত্যাদি।
ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি
বর্তমানে ডায়াবেটিসের সমস্যা সব থেকে বিপদজনক একটি রোগ। কেননা ডায়াবেটিস হলে আর
কখনো ভালো হতে চায় না এক কথায় ভালো হয় না। কিন্তু ডায়াবেটিস এর পরিমাণ কম
রাখতে আমাদের কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। চলুন এই পর্বের মাধ্যমে জেনে
নেওয়া যাক ডায়াবেটিস হলে করণীয় কি।
ধাপ-১ঃ প্রাথমিক প্রতিরোধ বা প্রাইমারি প্রিভেনশন ধাপ। এ ধাপ ডায়াবেটিস
হওয়ার পূর্বেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা হয়।এ ধাপে সুশৃংখল এবং নিয়ন্ত্রিত
জীবনযাপন এবং খাদ্যাভাসের মাধ্যমে অনেকাংশে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেমন,
ফাস্টফুড পরিহার করা, অত্যাধিক ক্যালারি যুক্ত খাবার গ্রহণ না করা, কোমল পানীয়,
ফাস্টফু্ড, আইসক্রিম, চকলেট ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার পরিহার করা।
খাদ্যাভাসে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, রঙিন ফলমূল, বিভিন্ন রকমের ছোট মাছ , কম
শর্করা এবং কম চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণে সবাইকে আগ্রহী করে তোলা। অলস জীবন যাপন
পরিহার করা এবং কায়িক পরিশ্রমে আগ্রহী হয়ে ওঠা। শিশুদের বিভিন্ন রকমের
খেলাধুলায় আগ্রহী করে তোলা এবং সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা এই জন্য বিভিন্ন রকম
সচেতনতা সবার মাঝে সৃষ্টি করা।
ডায়াবেটিস কি-Onuperona It
আপনি যে কি জানেন ডায়াবেটিস কি? যদি না জেনে থাকেন তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। এই
পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ডায়াবেটিস সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া
যাক ডায়াবেটিস কি।
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ। এটি এক ধরনের মেটাবলিক ডিসঅর্ডার।ডায়াবেটিস হলো এক
ধরনের রোগ, এতে রক্তে গ্লোস কোচের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। সুদীর্ঘ
সময় ধরে যদি রক্তে গ্লোকজ লেভেলের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি থাকে এবং
শরীর যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপাদন করতে না পারে তখন তাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। কখনো কখনো
শরীর যথেষ্ট পরিমাণ ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না অথবা ইনসুলিন উৎপাদিত হয় কিন্তু
কার্যকর ভাবে ব্যবহার করতে পারেনা তখনই মূলত ডায়াবেটিস রোগ দেখা যায়। এটি একটি
দীর্ঘস্থায়ী রোগ। হঠাৎ করে ডায়াবেটিস অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া কিংবা অতিরিক্ত কমে
গেলে রোগীর আকস্মিক মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস কত তারিখ-Onuperona It
বর্তমানে বিশ্বে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি মানুষের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে। তাই
ডায়াবেটিস সচেতনতা বাড়াতে প্রত্যক বছর একটি নির্দিষ্ট দিনের বিশ্ব ডায়াবেটিস
দিবস পালন করা হয়ে থাকে। অনেকেই জানে না ডায়াবেটিস হলে কি করনীয় এবং
ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কি করতে হবে সেই সম্পর্কে। এক কথায় মূলত
ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রত্যক বছর ডায়াবেটিস দিবস পালন করা
হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস কত তারিখ পালন করা হয়।
ডায়াবেটিস সম্পর্কে সাধারণ জনগণের সচেতনতা বিধির লক্ষ্যে
বিশ্বব্যাপী ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়। এ বছরের মূল
প্রতিপাদ্য হলো" আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিস কে জানুন"।
ডায়াবেটিস রোগ কেন হয়-ডায়াবেটিস রোগের কারণ
বর্তমানে যত দিন যাচ্ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বর্তমানে সকলের মাঝে ডায়বেটিস ছড়িয়ে পড়েছে এর মূল কারণ হলো ডায়াবেটিস
সম্পর্কে অসচেতনতা। আমরা অনেকেই জানিনা ডায়াবেটিস রোগ কেন হয় অথবা ডায়াবেটিস
রোগের কারণ কি। অথচ একসময় হুট করে আমাদের শরীরে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তাই চলুন
আজকের এই পর্বের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস রোগ কেন হয় ডায়াবেটিস
রোগের কারণ গুলো।
সাধারণত ইনসুলিনের অভাবে ডায়াবেটিস রোগ হয়ে থাকে। যখন আমরা খাবার খাই, তখন
আমাদের অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। এই ইনসুলিনের কাজ হল, আমরা যে ধরনের
খাবার খাচ্ছি তা থেকে অতিরিক্ত পরিমাণের গ্লোকজ কমিয়ে দেওয়া। এবং প্রয়োজনীয়
গ্লোকজ কে কাজে লাগানো । যখন কোন কারনে বিটা কোষ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ
ইনসুলিন উৎপাদন হয় না বা পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন উৎপন্ন হয় কিন্তু সঠিকভাবে
কাজ করতে পারে না সে অবস্থাকে আমরা ডায়াবেটিস হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি। যেহেতু
ইনসুলিন গ্লোকজ মাত্রার ওপর কাজ করতে পারে না সেহেতু আমাদের শরীরে তখন
অতিরিক্ত পরিমাণ গ্লোকজ জমে যায়।
ডায়াবেটিস রোগের ধরন-ডায়াবেটিস কত প্রকার
বর্তমানে এমন হয়ে এসেছে যে প্রায় প্রত্যকটি পরিবারে কোন না কোন সদস্য
ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত। ডায়াবেটিস হলে হতাশার কিছু নেই প্রথমে আমাদের
সনাক্ত করতে হবে কোন ধরনের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়েছে। পরবর্তীতে সনাক্তর পর
অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। ডায়াবেটিস সাধারণত দুই
প্রকার হয়ে থাকে যেমনঃ
- টাইপ-১ ডায়াবেটিসঃ টাইপ-১ হলো সেই ধরনের ডায়াবেটিস যাদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরি হয় না। তারা পুরোপুরি ইনসুলিন বা ঔষধের ওপর নির্ভরশীল।
- টাইপ-২ ডায়াবেটিসঃ টাইপ-২ রোগীদের ক্ষেত্রে তাদের শরীরে যে ডায়াবেটিস আছে এটা বোঝাই যায় না। এমনকি ডায়াবেটিসের কোন লক্ষণও তাদের মাঝে পরিলক্ষিত হয় না। তবে আগাম সর্তকতা অবলম্বন করে রাখলে৭০% ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। আমাদের দেশে শতকরা৯৫% ডায়াবেটিস রোগী টাইপ-২ ধরনের।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পদ্ধতি-ডায়াবেটিস শনাক্তের পরীক্ষা
ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ শরীরে থাকলেই যে তার পুরোপুরি ডায়াবেটিস হয়েছে এমন
কিন্তু নয়। ডায়াবেটিস পরীক্ষা না করা পর্যন্ত ডায়াবেটিস সম্পর্কে বা
ডায়বেটিসের কোন ওষুধ সেবন করা যাবে না। আপনাকে অবশ্যই ডায়াবেটিকস নির্ণয়ের
মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে কিনা। চলুন পর্বের মাধ্যমে
জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস নির্ণয়ের পদ্ধতি-ডায়াবেটিস শনাক্তের পরীক্ষা
নিয়ম।
আরো পড়ুনঃ মাসিক হলে করণীয় - মাসিক হলে কি করা উচিত
- ওজিটিটিঃ ডায়াবেটিস সনাক্ত করার বহুল ব্যবহৃত সহজ এবং অধিক কার্যকরী পরীক্ষা পদ্ধতি হল' ও ওরাল গ্লোকজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি' এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করার জন্য, রোগীকে সকালের না খেয়ে একেবারে খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হয়, এবং তারপর গ্লুকোজ যুক্ত শরবত পানের দুই ঘন্টা পর আবারো রক্তে গ্লোকজ পরীক্ষা করতে হয়। সেই পদ্ধতিতে সঠিক এবং নির্ভুলভাবে ডায়াবেটিস ও প্রি-ডায়াবেটিস রোগ শনাক্ত করা হয়। খালি পেটে যদি রক্তে গ্লোকজ মাত্রা ৭.৫ এবং খাবার গ্রহণের পর ১১ এর বেশি হয় তাহলে ডায়াবেটিস রোগ রয়েছে বলা যায়।
- এইচবিএ১সিঃ এ পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের কয়েক মাসের গড় শর্করার নির্ণয় করা হয় এবং সে অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা হয়।এইচবিএ১সির মান যদি ৬.৫ হয়ে থাকে তাহলে ডায়াবেটিস আছে বলে ধরা হবে। এবং এই মান যদি৫.৭ -৬.৫ এর মধ্যে থাকে তাহলে ডায়াবেটিসের পূর্বাবস্থা হিসেবে ধরা হয়। তবে গর্ভকালীন সময়ে এ পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যাবে না।
ডায়াবেটিস রোগের কারণ
বর্তমানে ডায়াবেটিসের সমস্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর অন্যতম কারণ হলো আমরা
নিজেরাই। আমাদের নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় এবং অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করায়
আমাদের শরীরের ডায়াবেটিসের পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। চলুন এই পর্বে জেনে
নেওয়া যাক ডায়াবেটিস রোগের কারণ কি।
- ডায়াবেটিস রোগের পারিবারিক ইতিহাস
- অতিরিক্ত মাত্রায় খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ
- কায়িক পরিশ্রমের অলসতা বা ঘাটতি
- অতিরিক্ত শারীরিক ওজন
- পঞ্চাশোর্ধ বয়স
- গর্ভাবস্থা(স্বাভাবিক)
- রক্তের চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
- বিষন্নতা
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ
- অনিয়মিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
- অস্বাস্থ্যকর খাবার
- রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি।
- শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিনের অভাব।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
ডায়াবেটিস হলে আমাদের করণীয় কিছুই থাকে না। বরং অবশ্যই আমাদের ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করতে হবে। চলুন এই পর্বের মাধ্যমে ডায়াবেটিস
নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায় গুলো জেনে নেই। কোন প্রকার ইনসুলিন বা ঔষধের বাহিরেও
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। শুধুমাত্র তিনটি নিয়ম
মানলেই খুব সহজেই একজন ডায়াবেটিস রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
সেগুলো হলো-
- সুশৃংখল জীবন যাপন
- নিয়মিত ঔষধ সেবন
- পরিমিত খাদ্য গ্রহণ
শুধুমাত্র এই তিনটি পদ্ধতি অবলম্বনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ডায়াবেটিসের
মতো সর্বগ্রাসি রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এবং সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবন
যাপন করতে পারবেন।৩দিন থেকে ৩ মাসের মধ্যেই ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে
পারেন।
ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধের উপায়
বলা হয়ে থাকে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ অধিক উত্তম। আমরা যদি এখন থেকেই
ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন হয় এবং সে অনুযায়ী চলি তাহলে ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস
হওয়ার সম্ভাবনা থেকে এড়িয়ে থাকবো। তিনটি ধাপে বা পর্যায়ে ডায়াবেটিস
রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিম্নে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
- ধাপ-২ঃ রোগ প্রতিরোধের দ্বিতীয় ধাপে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগ সনাক্তকরণ এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা। যেহেতু ডায়াবেটিস একটি সর্বগাছি রোগ তাই এর জটিলতাগুলো এর প্রাথমিক পর্যায়ে থেকেই শুরু হয়ে যায়। যদি সঠিক সময়ের রোগ নির্ণয় করা ব্যাহত হয় তবে এর চিকিৎসায় বিভিন্ন রকমের জটিলতা দেখা দিতে থাকে। আপনার বয়স যদি ৪৫ কিংবা তার বেশি হয়ে থাকে, স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন বেশি হয়, খুব নিকট আত্মীয়র কারো যদি অতীতে ডায়াবেটিস থেকে থাকে কিংবা শারীরিক কারিকসনের ঘাটতি থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা জরুরি। এবং মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নিতে হবে।
- ধাপ-৩ঃ তৃতীয় ধাপে ডায়াবেটিস জনিত বিভিন্ন জটিলতা শনাক্তকরণ এবং এ বিষয়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা। ডায়াবেটিস খুব সহজেই নিরবে রোগীর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভয়াবহ ক্ষতি করে থাকে। যেমন; রোগীর হার্ট,রক্তনালী,কিডনি,চোখ,স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে। প্রয়োজনীয় এবং নিয়মিত ঔষধ সেবনের মাধ্যমে অনিয়ন্তিত ডায়াবেটিস খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায়। এবং ডায়াবেটিসের বিভিন্ন জটিলতাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা এবং পুনর্বাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য উপরে ধাপ ১ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়
ডায়াবেটিস যদি কারো শরীরে একবার হয়ে থাকে তবে কখনো আর ভালো হবে না। তবে
অবশ্যই আমাদের ডায়াবেটিস না হওয়ার পূর্বে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতন থাকতে
হবে যেন আমাদের শরীরের ডায়াবেটিস আক্রান্ত না হয়। চলুন এই পর্বের মাধ্যমে জেনে
নেওয়া যাক ডায়াবেটিস রোগ থেকে মুক্তির উপায়।
- অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার বা রেড মিট পরিহার করা
- বিভিন্ন রকম কোমল পানীয় না খাওয়া
- প্রক্রিয়াজাতকরণ বিভিন্ন ধরনের খাবার পরিহার করা
- ফাস্টফুড বা স্টেট ফুড পরিহার করা বা একেবারেই না খাওয়া
- অধিক পরিমাণে সবুজ শাকসবজি গ্রহণ করা
- রঙিন ফলমূল গ্রহণ করা
- ছোট মাছ খাওয়া
- কম চর্বিযুক্ত এবং কম শর্করাযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা
- শারীরিক কায়িক পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে তোলা
- শিশুদের ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করে তোলা।
ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পেতে যে খাবারগুলো গ্রহণ করা উচিত-ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ১০ উপায়
আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে ডায়াবেটিস একটি সর্বগ্রাসী রোগ। একবার এ রোগ ধরা
পড়লে এটা সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব হয় না। তবে কিছু নিয়ম মেনে জীবন
যাপন করলে এর থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পাওয়া যায় এবং ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে
রাখা যাই। তাই আমাদের উচিত ডায়াবেটিস হওয়ার আগেই সে সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি
করা এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপন করা। সে ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত খাদ্যগুলো গ্রহণ
করার মাধ্যমে আমরা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারি। এবং ডায়াবেটিসের মতো
মানবদেহে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে থাকতে পারবো। নিম্নলিখিত উপায়গুলো মেনে
চলার মাধ্যমে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই শূন্যতা চলে আসবে। তবে
অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার পরিবারে কখনো কারো ডায়াবেটিসের ইতিহাস ছিল কিনা।
- ওজনঃঅতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। বয়স এবং ওজন অনুযায়ী শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
- স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়াঃ কম তেল চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং খাবারের সবসময় শাকসবজি রাখা
- সালাদ খাওয়াঃপ্রতিদিনের খাবারের আইটেমে অবশ্যই খেলার জাতীয় সবজি রাখা যেমন শসা গাজর লেটুস পাতা টমেটো পেঁয়াজ বা রসুন কিংবা ভিনেগার
- ব্যায়াম বা হাটাহাটি করাঃ নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করা বা সাধারণ ব্যায়ামগুলো করা। দিনে অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে আপনার শারীরিক বিপাকীয় হার আপনার দেহের ইনসুলিনের মাত্রা কে ভারসাম্যপূর্ণ রাখবে ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসবে
- শস্যদানাঃ শস্য জাতীয় বা শস্যদানা গ্রহণ করা। এ ধরনের খাদ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ, যেটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কে কমাতে সাহায্য করে । শস্যজাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে রয়েছে ওটস, বার্লি, যব, ব্রাউন রাইস, ভুট্টা, সীম জাতীয় বীজ, বাজরা ইত্যাদি। এ খাবারগুলো আপনাকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে কমাবে।সে সাথে এগুলো আরো অন্যান্য রোগ যেমন উচো রক্তচাপ কোষ্ঠকাঠিন্য এগুলো থেকেও মুক্তি দেয়।
- কফিঃ দিনে অন্তত দুবার কফি পান করুন। কফিতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি২৯% কমিয়ে দেয়। তবে অবশ্যই চিনি যুক্ত কফি পান করা যাবে না।
- ফাস্টফুডঃ আমাদের আশ পাশের অনেকেই ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারের লোভ সামলাতে পারেন না । কিন্তু এইসব ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের রয়েছে প্রচুর পরিমানে কোলেস্টেরল যা উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা , হজমে সমস্যা এবং হৃদরোগের মতো বিভিন্ন ধরনের রোগ তৈরি করতে পারে। আবার এইসব খাবারগুলো রক্তের ইনসুলিনের মাত্রা কে বিক্ষিপ্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
- দারুচিনিঃদারুচিনি পাউডার বা তেল আকারে নিয়মিত খাবার হিসেবে গ্রহণ করলে ৪৮% ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়। ট্রাইগ্লিসারাইড ও অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল ক্ষতিকর মাত্রা কমিয়ে আনার প্রকৃতি ক্ষমতা দারুচিনির মধ্যে রয়েছে। এবং এটি রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এতে করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।
- মানসিক চাপঃমাথাব্যথা থেকে ক্যান্সার এসব ভয়াবহ রোগ হতে পারে শুধুমাত্র একটি কারণে তা হল অতিরিক্ত মানসিক চাপ। যদি আপনি অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকেন তাহলে অবশ্যই মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করুন অথবা বিভিন্ন প্রকার যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন এর আশ্রয় নিন। এতে করে আপনি স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকবেন এতে আপনার শরীরের হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখবে।
- ধূমপানঃমানসিক চাপের মতোই আরেকটি ক্ষতিকর জিনিস হল ধূমপান। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন প্রকার মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করতে পারে। ধূমপানের কারণে ফুসফুস ক্যান্সারের মত ভয়াবহ রোগ সৃষ্টি হতে পারে। ধূমপান ডায়াবেটিস সৃষ্টিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু ডায়াবেটিস নয় সব ধরনের ক্ষতিকর রোগ থেকে বাঁচতে আদি ধূমপান পরিহার করুন।
শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে এতক্ষণে নিশ্চয় ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ এবং
ডায়াবেটিস হলে করণীয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনার যদি ডায়াবেটিস সম্পর্কে
কোন মতামত থেকে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আজকের পর্বটি যদি ভালো
লেগে থাকে তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।