আমিষ জাতীয় খাবার কি কি - আমিষ জাতীয় খাবার সম্পর্কে জানুন
আমিষ জাতীয় খাবার এবং আমিষ জাতীয় খাবার কি কি জানতে পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। আমাদের প্রত্যেকেরই আমি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত বিশেষ করে বাড়িতে যদি ছোট বাচ্চারা থাকে তবে তাদেরকে আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়ানো উত্তম। পাশাপাশি গর্ভবতী মায়েদের জন্য আমিষ জাতীয় খাবার গুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমিষ জাতীয় খাবার কোনগুলো পূর্ব থেকেই জেনেনিন।মানব দেহের জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আবশ্যকীয় এবং পুষ্টিকর উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে আমিষ জাতীয় খাবার। আমি জাতীয় খাবার গুলো দেহ গঠন এবং শক্তি উৎপাদন করতে সাহায্য করে থাকে। তাই অবশ্যই আমি জাতীয় খাবার খাওয়া উত্তম। তাই আমিষ জাতীয় খাবার কি কি জেনে রাখুন।
সূচিপত্রঃ আমিষ কাকে বলে - আমিষ জাতীয় খাবার কি কি
- আমিষ জাতীয় খাবার
- অত্যাবশকীয় নয়টি (৯) অ্যামাইনো এসিড
- আমিষ জাতীয় খাবার কি কি
- আমিষের অভাবে কি কি রোগ হয়?
- বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন প্রোটিন গ্রহণের তালিকা
- আমিষ জাতীয় খাবারের উপকারিতা
- আমিষ জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ কি
- আমিষ জাতীয় খাদ্যের উপাদান সমূহ
- আমিষ জাতীয় খাবারের তালিকা
- আমিষ জাতীয় খাবার কাকে বলে
- আমিষ জাতীয় খাবার গুলো কি কি
- শেষ কথা
আমিষ জাতীয় খাবার
মানবদেহের ও তা আবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে একটি হল আমিষ যা মানব দেহের দেহ গঠনের এবং শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। তবে মানবদেহের কাজ করার শক্তি জোগাড়ে সবথেকে বেশি সাহায্য করে শর্করা জাতীয় খাদ্য। যেখানে প্রতি চার কিলো ক্যালরিতে ছোটলোজুল শক্তি উৎপন্ন করে। এছাড়াও চর্বি জাতীয় পদার্থ কিছুটা সাহায্য করে। আমিষ মানবদেহের গঠনে সাহায্য করে কারণ আমি সে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার অ্যামাইনো এসিড সমূহ। অ্যামাইনো এসিড সমূহ প্রোটিনের গাঠনিক একক ও বলা চলে।
প্রোটিন বা আমিষ হল প্রেপ টাইপ বন্ধন সমূহে দ্বারা পরস্পরের সাথে সংযুক্ত অ্যামাইনো এসিড এর পলিমার। যা পাকস্থলীতে অবস্থিত হাইড্রোক্লোরিক এসিড ও পোর্ট্রিইয়েজ নামক উচ্ছেচক এর ফলে পরিপাকের সময় ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পলি পেপটাইড শৃংখলে পরিণত হয়। উক্ত অ্যামাইনো এসিড গুলো মানবদেহে জৈবসংশ্লেষণ হতে পারে না।
অত্যাবশকীয় নয়টি (৯) অ্যামাইনো এসিড
অত্যাবশকীয় নয়টি (৯) অ্যামাইনো এসিড এর নাম জানতে পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। মানুষ খাদ্যের মাধ্যমে প্রোটিন থেকে নয়টি amino এসিড আহরণ করে। যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন কি এই এমনো এসিড সমূহের ঘাঁটির ফলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এগুলি মানুষের প্রতিটি দেহকোষে অবস্থান করে এবং হরমোন, নিউক্লিক অ্যাসিড, উৎসেচক পান রস, অনাকর্ম প্রস্তুতর ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় অনু সমূহ সৃষ্টি করে। মানবদেহে অত্যাবশকীয় নয়টি (৯) অ্যামাইনো এসিড গুলো হলঃ
- ফিনাইল আলানিন
- ভ্যালিন
- থিওনিন
- ট্রিপ্ট ফ্যান
- ম্যাথিউনিন
- লিউসিন
- লাইসিন
- আই সো লিউসিন
- হিস্টিডিন
আমিষ জাতীয় খাবার কি কি
আমিষ জাতীয় খাবার কি কি জানতে চাচ্ছেন? আপনি যদি আমি জাতীয় খাবার গুলোর তালিকা জানতে চান তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। এই পর্বে আলোকপাত করা হবে আমিষ জাতীয় খাবার কি কি। যে সমস্ত খাবার দেহকোষ গঠনে সম্পূর্ণরূপে সাহায্য করে তাদেরকে আমিষ জাতীয় খাবার বলে। উৎসের ওপর ভিত্তি করে আমিষ জাতীয় খাদ্যকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
প্রাণীজ আমিষঃ এজাতীয় খাবারগুলো আমরা সাধারণত প্রাণী থেকে পেয়ে থাকি। এগুলোকে উচ্চমাত্রার আমিষ বা প্রথম শ্রেণীর আমিষও বলা যায়।
যেমনঃ মাংস, ডিম, দুধ, মাছ, ইত্যাদি।
উদ্ভিজ্জ আমিষঃ এজাতীয় আমিষ খাবারগুলো আমরা সাধারণত উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি। একে দ্বিতীয় শ্রেণীর আমিষ ও বলা হয়।
যেমনঃ বাদাম, ডাল, মটরশুঁটি, সয়াবিন,সিমের বিচি ইত্যাদি।
আমিষের অভাবে কি কি রোগ হয়?
আমিষের অভাবে অনেক ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। তাই আজকে আমরা আমিষের অভাবে কি কি রোগ হয়? সেই সম্পর্কে আলোচনা করব। আমিষ জাতীয় খাদ্যের অভাবে যে সমস্ত রোগগুলো দেখা যায় সেগুলো হলো-
গর্ভকালীন সময়েঃ
- গর্ভপাত
- প্রি ম্যাচিওর বেবি
বাচ্চাদের ক্ষেত্রেঃ
- অপুষ্টির
- কোয়াশিয়র কর রোগ
- স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়
- বুদ্ধির বিকাশ কম হয়
- ওজন কমে যায়।
প্রাপ্তবয়স্কদেরঃ
অপুষ্টি
কোয়াশিওর কর রোগ
ওজন হ্রাস
খাবারের অরুচি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। ইত্যাদি
বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন প্রোটিন গ্রহণের তালিকা
বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন প্রোটিন গ্রহণের তালিকা রয়েছে। এই তালিকা অনুযায়ী আপনার পরিবারের সকল সদস্যদের আমিষ জাতীয় খাবার এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়াতে পারেন। বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন প্রোটিন গ্রহণের তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
বয়স প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা
শিশু ৩৫-৪০%
শৈশব ৪০-৬০%
কৈশোর ৬০-৭০%
প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ৬০-৭০%
প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ৬০%
গর্ভবতী মহিলা ৯০%
গর্ভবতী মা ১০০%
আমিষ জাতীয় খাবারের উপকারিতা
আমিষ জাতীয় খাবারের উপকারিতা গুলো জানেন কি? আমি জাতীয় খাবারের উপকারিতা সম্পর্কে যদি জানতে চান তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি যে আমিষ জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরের দেহকোষ গঠনে সাহায্য করে। এটি আমাদের শরীরের অস্থি থেকে শুরু করে সমস্ত অঙ্গ পতঙ্গ এমন কি রক্তকণিকা গঠনেও সাহায্য করে। এখন আমরা আমিষ জাতীয় খাবারের উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।
- দেহ গঠনে সাহায্য করে
- দেহের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে
- পেশী গঠনে সাহায্য করে
- চুল নখ ও দাঁত গঠনে সাহায্য করে
- রক্তকণিকা গঠনে সাহায্য করে\
- ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে নতুন টিস্যু গজাতে সাহায্য করে
- শর্করা ও স্নেহ জাতীয় পদার্থের ঘাটটি দেখা দিলে তাপ শক্তি উৎপাদনে কাজ করে
- মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে
- শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত রাখতে সাহায্য করে
- কোয়াশিওরকর জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- মেধা ও বুদ্ধির বিকাশের সাহায্য করে। ইত্যাদি
আমিষ জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ কি
আমিষ জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ কি জানেন? আমিষ জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ হলঃ-
- মস্তিষ্কের বিকাশের সাহায্য করা
- মেধা ও বুদ্ধির বিকাশ সাধন করা
- দৈহিক বৃদ্ধি
- নতুন টিস্যু উৎপাদন
- এনজাইমের রূপান্তরিত হওয়া
- ডিএনএ ও আর এন এ তৈরিতে অ্যামাইনো এসিড সরবরাহ করা
- অক্সিজেন বাহক হিসেবে কাজ করে
- দেহের শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে
- দেহ গঠন ও বৃদ্ধি সাধন
- জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা
- দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- দেহের বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে
- এন্টি বডি তৈরি করতে সাহায্য করে
- রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করে
- কোষীয় বিপাকে অংশগ্রহণ করে
- দেহা অভ্যন্তরীণ জারক সমূহ তৈরিতে সাহায্য করে(হরমোন, ট্রিপসিন ও পেপসিন)
আমিষ জাতীয় খাদ্যের উপাদান সমূহ
আমিষ জাতীয় খাদ্যের উপাদান সমূহ অর্থাৎ আমি জাতীয় খাদ্যের মধ্যে কোন কোন উপাদান রয়েছে সেগুলো যদি জানতে চান তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। আমিষ জাতীয় খাদ্যের উপাদান সমূহ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- আমিষ জাতীয় খাদ্য সাধারনত কার্বন হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন এর সমন্বয়ে গঠিত
- আমি জাতীয় খাদ্যে কার্বন হাইড্রোজেন ও নাইট্রোজেন থাকার পাশাপাশি এতে সামান্য পরিমাণ সালফার, ফসফরাস ও আয়রন রয়েছে।
- আমিষ জাতীয় খাদ্যের নাইট্রোজেনের পরিমাণ 16 শতাংশ
- উৎসের ওপর ভিত্তি করে আমিষ জাতীয় খাদ্য দুই প্রকারঃ প্রথম শ্রেণীর আমিষ-ডিম, মাছ মাংস দুধ। এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর আমিষঃ ডাল ডাল, সিমের বিচি, চিনা বাদাম ইত্যাদি।
- আমিষ জাতীয় খাদ্যে দেহকোষটির জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি অমান্য এসিড বিদ্যমান রয়েছে।
- অ্যামাইনো এসিড ও নাইট্রোজেন থাকাই আমিষ জাতীয় খাদ্য শর্করা বা স্নেহ জাতীয় খাদ্যের থেকে আলাদা।
আমিষ জাতীয় খাবারের তালিকা
প্রাণীজ আমিষঃ এজাতীয় খাবারগুলো আমরা সাধারণত প্রাণী থেকে পেয়ে থাকি। এগুলোকে উচ্চমাত্রার আমিষ বা প্রথম শ্রেণীর আমিষও বলা যায়।
যেমনঃ মাংস, ডিম, দুধ, মাছ, ইত্যাদি।
উদ্ভিজ্জ আমিষঃ এজাতীয় আমিষ খাবারগুলো আমরা সাধারণত উদ্ভিদ থেকে পেয়ে থাকি। একে দ্বিতীয় শ্রেণীর আমিষ ও বলা হয়।
যেমনঃ বাদাম, ডাল, মটরশুঁটি, সয়াবিন,সিমের বিচি ইত্যাদি।
আমিষ জাতীয় খাবার কাকে বলে
আমিষ জাতীয় খাবার কাকে বলে এবং আমিষ জাতীয় খাবার কি জানতে পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। আমিষ জাতীয় খাবার কাকে বলে জেনে নেন। কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেনের সমন্বয়ে গঠিত মানবদেহের জন্য ওটা আবশ্যকীয় উপাদান যা দেহের ক্ষয় পূরণ ও বৃদ্ধিসাধনে সাহায্য করে। এটি মানবদেহের মৌলিক ও অত্যাবশকীয় পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে একটি। তবে এতে সামান্য পরিমাণ সালফার, ফসফরাস ও আয়রন রয়েছে। এতে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড সমূহ রয়েছে। আশা করি জানতে পেরেছেন আমি জাতীয় খাবার কাকে বলে।
আমিষ জাতীয় খাবার গুলো কি কি
আপনি নিশ্চয় আমিষ জাতীয় খাবার কি কি জানতে চাচ্ছেন? হ্যাঁ আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আমিষ জাতীয় খাবার কি কি। আমি জাতীয় খাবার গুলোঃ মাংস,ডিম,দুধ,মাছ,লিভার, পনির, ছানা এবং ভক্ষণযোগ্য কীটপতঙ্গবাদাম, ডাল, মটরশুঁটি, সয়াবিন,সিমের বিচি , বিভিন্ন ধরনের শস্যদানা, কাঠবাদাম, ও অন্যান্য বাদাম সমূহ।
শেষ কথা
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রত্যেকেরই আমি জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন রয়েছে। কেননা দেহ গঠন এবং শরীরে শক্তি যোগান দিতে সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করে আমিষ জাতীয় খাবার। তাই অবশ্যই আমরা সর্বদাই চেষ্টা করব আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়ার। উপরের আলোচনা অনুযায়ী নিশ্চয়ই আপনি আমি জাতীয় খাবার কোনগুলো জানতে পেরেছেন। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিবেন।