হার্ট অ্যাটাক - হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষন
যেকোনো সময় একটি মানুষের হার্ট এটাক হবে এটাই স্বাভাবিক। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে
চলাফেরা করা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য রক্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে
একজন স্বাভাবিক মানুষের হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তবে হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষন
পূর্বে থেকে জানতে পারবেন চলে যেসব পরিবর্তন আসলে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
আপনি যেসব লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন যে আপনার হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিয়েছে
সেগুলো নিচে আলোচনা করা হবে। একজন স্বাভাবিক মানুষের হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হতে
পারে। তবে নিচের লক্ষণগুলো যদি দেখা দেয় তাহলে সতর্ক থাকতে হবে।
সূচিপত্রঃ হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো কি কি
- হার্ট অ্যাটাক কেন হয়
- হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষন
- হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়
- হার্ট অ্যাটাক কি
- হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়
- হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা
- হার্ট অ্যাটাক কত প্রকার
- হার্ট অ্যাটাক এর পূর্ব লক্ষণ
- শেষ কথা
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়
হার্ট অ্যাটাক কেন হয় প্রথমত এটা জানতে হবে। হার্ট অ্যাটাক কেন হয় যদি না
জেনে থাকেন তাহলে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কেননা যে কারণে হতে পারে
হার্ট অ্যাটাক সেই কাজটি অনাকাঙ্ক্ষিত বা ইচ্ছাকৃতভাবে আপনি প্রতিনিয়ত
করতেও পারেন। হৃদপিণ্ডে রক্ত চঞ্চলন বন্ধ হয়ে গেলে এমন অবস্থাকে
হার্ট অ্যাটাক বলা হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ মানুষ
হার্ট অ্যাটাক হওয়ার প্রায় ১ মাস আগে কিছু কিছু লক্ষণ অনুভব করতে পারে।
পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেশি। হার্ট
অ্যাটাক কেন হয় নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- উচ্চ রক্তচাপ
- ডায়াবেটিস
- অতিরিক্ত দৈহিক ওজন
- কায়িক পরিশ্রমের অভাব
- রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি
- ধূমপান
- অস্বাস্থ্যকর ও চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ।
- রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা। ইত্যাদি
হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষন
হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষন পূর্ব থেকেই বুঝতে পারলে হয়তো আপনি বড় দুর্ঘটনার
হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন। হার্ট অ্যাটাক হলে যে কোন সময় মৃত্যু পর্যন্ত
হতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাক এর লক্ষন গুলো শরীরে উপলব্ধি পেলেই সাথে
সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ গুলো হলঃ
- বুকের মাঝখানে চাপ অনুভব হওয়া। অস্বস্তিকার এবং ঝাঁকুনি অনুভব হওয়া। বুকের মাঝখানে চাপ কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
- বাহু , পিঠ , চোয়াল ও ঘাড় এবং মাঝেমধ্যে পাকস্থলীতেও অস্বাভাবিকতা অনুভব হয়।
- বুক চেপে আসা। নিঃশ্বাস ছোট হয়ে আসা।
- ঘাড় থেকে শরীর ঠান্ডা হয়ে আসা।
- শ্বাসকষ্ট বা কাশি।
- মাথাব্যথা।
- বমি বমি ভাব। ইত্যাদি।
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায়
হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায় রয়েছে যদি আপনি সঠিক পদক্ষেপটি গ্রহণ
করতে পারেন। হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচার জন্য পূর্ব থেকে সতর্ক থাকলে
দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে পারেন। হার্ট অ্যাটাক থেকে বাচার উপায় জেনে
রাখুন।
আরো পড়ুনঃ মানসিক রোগ - মানসিক রোগের লক্ষণসমূহ
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
- হাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
- ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ
- নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ
- ধূমপান ত্যাগ করা
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- অলস জীবনযাপন পরিহার করা
- অতিরিক্ত তেল মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করা। ইত্যাদি।
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়
হার্ট অ্যাটাক কেন হয় জানেন? হার্ট অ্যাটাক বিভিন্ন কারণে হতে পারে।
যেমন আপনি যদি পরিশ্রম না করেন বসে বসে আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি
হয় তাহলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এছাড়াও আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর
কারণে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। হার্ট অ্যাটাক কেন হয় এটা আজকে আমরা
আপনাদের মাঝে জানাবো। নিচের কারণগুলোর জন্য একজন মানুষের হার্ট অ্যাটাক
হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- উচ্চ রক্তচাপ
- ডায়াবেটিস
- অতিরিক্ত দৈহিক ওজন
- কায়িক পরিশ্রমের অভাব
- রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি
- ধূমপান
- অস্বাস্থ্যকর ও চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ।
- রক্তে অক্সিজেনের স্বল্পতা। ইত্যাদি
হার্ট অ্যাটাক কি
হার্ট অ্যাটাক কি জানেন? যদি না জেনে থাকেন তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। এই
পর্বে আপনি জানতে পারবেন হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে। হার্ট এটাক কেন হতে
পারে হার্ট অ্যাটাকের পূর্বে কি কি লক্ষণ দেখা দিবে এই সকল ইতিপূর্বে
আমরা আলোচনা করেছি। এখন জেনে নিন হার্ট অ্যাটাক কি। হৃদপিন্ডে যখন
রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় বা রক্ত পাম্প হওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এমন
অবস্থাকে হার্ট অ্যাটাক বলে। এছাড়াও মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের ফলে রক্তে
অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা কমে গেলে এমন অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয়
হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয় অনেকেই জানতে চাই। হার্ট অ্যাটাক হলে অবশ্যই
বাড়িতে না রেখে সাথে সাথে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। অনেকেই
বিভিন্ন জায়গাতে প্রশ্ন করে হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয় কি। হার্ট অ্যাটাক
হলে সর্বপ্রথম করণীয় কি চলুন জেনে নেওয়া যাক। এমত অবস্থায় যত
দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। অনতিবিলম্বে
অ্যাম্বুলেন্স কল করুন এবং ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এ সময় রোগীকে
কখনো একা ছাড়া উচিত নয়।
হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা
হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা জেনে রাখলে যে কোন বিপদ আপনি মোকাবেলা
করতে পারবেন। অনেক সময় দেখা যায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর বাড়ি থেকে
মেডিকেল দূরে হওয়ার কারণে কিছু করার থাকে না। তাই যতটা সম্ভব প্রাথমিক
চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে মেডিকেলে পাঠানো উচিত। হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক
চিকিৎসা হলঃ
- হার্ট অ্যাটাক করেছে এমনটা বুঝতে পারলে রোগীর ঘাড় এবং মাথা হেলান দিয়ে হাঁটু মুড়ে বসাতে হবে। যাতে করে উচ্চ রক্তচাপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
- রোগীর যদি অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ওষুধে এলার্জি না থেকে থাকে তবে যত দ্রুত সম্ভব এসপিরিন জাতীয় ওষুধ দিতে হবে। এক্ষেত্রে ৩০০ গ্রাম গ্রহণ করলে হার্ট এটাকের অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
হার্ট অ্যাটাক কত প্রকার
হার্ট অ্যাটাক কত প্রকার জানতে পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। হার্ট অ্যাটাকের
প্রকারভেদ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ হার্ট অ্যাটাক সাধারণত তিন প্রকার।
যথাঃ-
- করোনারি স্পাজম অথবা অস্থির এনজাইনা।
- ST segment elevation মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন
- Non-ST সেগমেন্ট এলিভেশন মায়োকার্ডিয়াল ইনফেকশন
হার্ট অ্যাটাক এর পূর্ব লক্ষণ
হার্ট অ্যাটাক এর পূর্ব লক্ষণ উপলব্ধি করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক
এর পূর্ব লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে নিকটস্থ হাসপাতালে হস্তান্তর করতে
হবে রোগীকে। হার্ট অ্যাটাক এর পূর্ব লক্ষণ হলঃ
- মানসিক চাপ
- শরীর ভারী হয়ে আসা
- বুকের মাঝখানে চাপ সৃষ্টি হয়ে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়া
- হালকা মাথাব্যথা
- মাথা ঝিমঝিম করা
- অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
- দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস
- বমি ভাব বা বমি বমি হওয়া
- শ্বাসকষ্ট বা কাশি হওয়া। ইত্যাদি।
শেষ কথা
উপরের আলোচনা অনুযায়ী এতক্ষণে আপনি হার্ট অ্যাটাক এবং হার্ট অ্যাটাক এর
লক্ষণ সম্পর্কে যদি জানতে বুঝতে পারেন তবে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেলে আপনার বন্ধুদের মাঝে
শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দেবেন।