কেমোথেরাপি কি - কেমোথেরাপি দাম কত বাংলাদেশ
ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। তবে অনেকেই জানে না কেমোথেরাপি
কি এবং কেমোথেরাপির দাম কত? কেমোথেরাপি এমন একটি চিকিৎসা যেটা সব স্থানে বা সব
মেডিকেলে দেওয়া হয় না। একজন রোগীকে কেমোথেরাপি করার পূর্বে
অবশ্যই কেমোথেরাপি কি জেনে নিবেন। কেমোথেরাপি দিতে কত টাকার প্রয়োজন
হয় জানতে পারবেন এই পর্বে।
কেমোথেরাপি মূলত কর্কট রোগীর জন্য অথবা ক্যান্সার রোগীর জন্য দেওয়া হয়।
ক্যান্সার রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য এই কেমোথেরাপি দিয়ে থাকে। তবে কেমোথেরাপি
মূলত কি এবং বাংলাদেশে এর বর্তমান মূল্য কত বা কেমোথেরাপি দিতে কত টাকা লাগে সেই
সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
সূচিপত্রঃ কেমোথেরাপি কতদিন পর পর দিতে হয়
- কেমোথেরাপি কি
- কেমোথেরাপির দাম কত
- কেমোথেরাপি খরচ কত বাংলাদেশ
- বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ কত
- কেমোথেরাপির পর করণীয়
- কেমোথেরাপি কত দিন পর পর দিতে হয়
- কেমোথেরাপি দেওয়ার নিয়ম
- কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- কেমোথেরাপি দিতে কত সময় লাগে
- কেমোথেরাপির দাম কত ভারতে
- কেমোথেরাপি দিলে কি হয়
- কেমোথেরাপি কিভাবে দেওয়া হয়
- বাংলাদেশের সেরা ক্যান্সার হাসপাতাল সমূহ
- শেষ কথা
কেমোথেরাপি কি
আপনি নিশ্চয়ই কেমোথেরাপি কি জানতে চাচ্ছেন? আর আপনি সঠিক জায়গায়
এসেছেন। এই পর্বে আপনি জানতে পারবেন কেমোথেরাপি সম্পর্কে বিস্তারিত সকল
প্রশ্নের উত্তর। এই পর্বে শেষে আপনি কেমোথেরাপি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন।
কেমোথেরাপি এমন এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অনিয়ন্তিত ক্যান্সার
কোষগুলোকে ধ্বংস করা হয় এবং সেই কোষগুলোর বিস্তার প্রতিরোধ করা হয়।
ক্যান্সারের ধরন অনুযায়ী কেমোথেরাপি নির্ধারণ করা হয়।
আরো পড়ুনঃ শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
অনেক ধরনের ঔষধের
সংমিশ্রণে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়ে থাকে। কর্কট রোগ বা ক্যান্সার রোগের
রাসায়নিক চিকিৎসা পদ্ধতিকে কেমোথেরাপি বলা হয়। কেমোথেরাপি হলো এমন এক ধরনের
চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে অনিয়ন্তিত ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করা এবং
কোষের বিস্তার লাভকে প্রতিহত করা সম্ভব।
কেমোথেরাপির দাম কত
কেমোথেরাপির দাম কত জানেন? কেমোথেরাপির দাম সম্পর্কে জানতে এই পর্বটি মনোযোগ
সহকারে পড়ুন। এছাড়াও আপনি জানতে পারবেন কেমোথেরাপি কেমন দেওয়া হয় এবং এর
বর্তমান মূল্য সম্পর্কে। ভারতে কেমোথেরাপির খরচ প্রত্যেক সেশনে তিন হাজার
থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়াও কেমোথেরাপির আগে ও পরে বিভিন্ন প্রকার
রেডিও থেরাপি, ও টার্গেটের থেরাপি ইত্যাদি সংমিশ্রণ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে
কেমোথেরাপি সম্পন্ন করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে কেমোথেরাপির খরচ অনেক বেশি হয়।
কেমোথেরাপি খরচ কত বাংলাদেশ
কর্কট রোগী বা ক্যান্সার রোগে জন্য কেমোথেরাপি খরচ কত বাংলাদেশ হবে অনেকেই
জানতে চাই। আপনিও যদি বাংলাদেশে কেমোথেরাপি খরচ কত পড়বে জানতে চান তবে এই
পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন। কেমোথেরাপি খরচ কত বাংলাদেশ
এ বিস্তারিত সহ জানুন। বাংলাদেশে কেমোথেরাপির খরচ হল,সরকারি হসপিটাল
সমূহে প্রত্যেক সেশনে কেমোথেরাপির খরচ ২০ হাজার টাকা এবং রেডিও থেরাপির খরচ ২৫
হাজার টাকা এবং অস্ত্রোপচারের জন্য ৬০ হাজার টাকার মত খরচ হয়ে থাকে।
ক্যান্সারের ধরন ও হসপিটাল এর ওপর ভিত্তি করে কেমোথেরাপির মূল্য কিছুটা কম বেশি
হতে পারে। যেমন প্রাইভেট হসপিটাল গুলোতে থেরাপির মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪০
হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ কত
ক্যান্সার একটি মরণব্যাধিক রোগ। ক্যান্সার রোগীকে বাঁচানোর প্রায় অসম্ভব হয়ে
যায়।একজন ক্যান্সার রোগীর জন্য বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ কত পড়বে এ
নিয়ে আজকে আলোচনা করা হবে। নিচে আজকে আলোচনা করব বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার
খরচ কত হবে সেই সম্পর্কে। তবে এই পর্বে জেনে নিন বাংলাদেশে ক্যান্সার চিকিৎসার
খরচ কত?
আরো পড়ুনঃ তাৎক্ষনিক ভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়
বাংলাদেশের একজন ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসার খরচ আনুমানিক ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা।
ক্যান্সার চিকিৎসার পরামর্শ ফি, রোগ নির্ণয় ফ্রি, বিভিন্ন ধরনের
পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অস্ত্রপাচার এছাড়াও ইনজেকশন সামগ্রী ও ঔষধ সামগ্রী, রয়েছে
যাতায়াত খরচ ও খাওয়া দাওয়া। রোগের ধরন ও চিকিৎসার ভেদে চিকিৎসার খরচের
তারতম্য হতে পারে।
কেমোথেরাপির পর করণীয়
কেমোথেরাপির পর করণীয় কি অবশ্যই জানতে হবে এবং সেই মতাবেক রোগীকে চলাফেরা
এবং চিকিৎসা দিতে হবে। কেমোথেরাপির পরেই যে একজন ক্যান্সার রোগী ভালো হয়ে
যাবে এমন কিন্তু নয়। তাই অবশ্যই কেমোথেরাপির পর করণীয় গুলো জেনে সঠিক
পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কেমো থেরাপি চলাকালীন সময়ে রোগীকে কঠোরভাবে
ধূমপান ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কেমোথেরাপি
সময় বরফেরাপি ও হার্ড ক্যান্ডি চিবানো কেমোথেরাপির বমি বমি ভাব থেকে মুক্ত
করে। ইমিউনো সাপ্রেশন বৃদ্ধি পেতে পারে।
কেমোথেরাপি কত দিন পর পর দিতে হয়
প্রথমে আপনাকে জানতে হবে কেমোথেরাপি কত দিন পর পর দিতে হয়। একজন রোগীকে যে
প্রতিদিন কেমোথেরাপি দিতে হবে এমন কিন্তু নয়। সঠিকভাবে এবং নিয়ম অনুযায়ী
কেমোথেরাপি কত দিন পর পর দিতে হয় এ নিয়ে আলোচনা করা হলো। কেমোথেরাপি কত
দিন পর পর দেওয়া হবে তা নির্ভর করে রোগীর ক্যান্সারের ধরন, ক্যান্সারের
অবস্থা, রোগীর শারীরিক অবস্থা এবং কেমোথেরাপির পর জটিলতা উপর নির্ভর করে। কিছু
প্রেমো থেরাপি 15 দিন পর পর দেওয়া হয় আবার কিছু রয়েছে যা এক থেকে দেড় মাস
পরও দেওয়া হয়।
কেমোথেরাপি দেওয়ার নিয়ম
একজন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অবশ্যই কেমোথেরাপি দেওয়ার নিয়ম আপনাকে বলে
দেবে। তারপরেও আপনি যদি কেমোথেরাপি দেওয়ার নিয়ম না জেনে থাকেন তবে এই পর্বে
জেনে নিন। কেমোথেরাপি দেওয়া নির্ভর করে রোগীর ক্যান্সারের ধরন ও পোকার
অনুযায়ী। রোগীর সার্বিক শারীরিক অবস্থার বিবেচনা এবং পূর্ববর্তী ক্যান্সারের
চিকিৎসা হয়েছে কিনা তার ওপর নির্ভর করে এবং ক্যান্সার কোষ গুলোর অবস্থান
নির্ধারণের মাধ্যমে কেমোথেরাপি দেওয়ার নিয়ম নির্ভর করে।
কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
একজন ক্যান্সার রোগীকে কেমোথেরাপি দেওয়ার পরে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে এমন
কিন্তু নয়। কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেমোথেরাপি দেওয়ার পর
আপনার শরীরে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেই সম্পর্কে আলোচনা করা
হবে। কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হলঃ-
- চুল পড়ে যাওয়া
- বমি বমি ভাব/বমি হওয়া
- সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া
- রক্তস্বল্পতা দেখা দেওয়া
- খাবারে অরুচি
- রক্ত ক্ষরণ দেখা দেওয়া
- অতিরিক্ত ক্লান্ত ভাব
- রক্তে প্লাটিলের সংখ্যা কমে যাওয়া
- অন্ত্র এর সমস্যা দেখা দেওয়া। ইত্যাদি।
কেমোথেরাপি দিতে কত সময় লাগে
কেমোথেরাপি দিতে কত সময় লাগে আপনি কি জানেন? কেমোথেরাপি দিতে একটি নির্দিষ্ট
সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য একটি নিয়মিত সময়কালের
জন্য রোগীকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়, যেটি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রোগীর
অবস্থা এবং শরীরের ধরন অনুযায়ী নির্ধারণ করেন। এই সময়কাল নির্ধারণ করে
রোগীর ক্যান্সারের ধরন এবং ক্যান্সার টি কোন স্তরে রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে
এবং ক্যান্সারের বিস্তীর্ণ তার ওপর। এটি এক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস বা বছর
পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
কেমোথেরাপির দাম কত ভারতে
ভারতে কেমোথেরাপির খরচ প্রত্যেক সেশনে তিন হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে।
এছাড়াও কেমোথেরাপির আগে ও পরে বিভিন্ন প্রকার রেডিও থেরাপি, ও টার্গেটের
থেরাপি ইত্যাদি সংমিশ্রণ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে কেমোথেরাপি সম্পন্ন করা হয়।
সবকিছু মিলিয়ে কেমোথেরাপির খরচ অনেক বেশি হয়।
কেমোথেরাপি দিলে কি হয়
কেমোথেরাপি দিলে কি হয় জানেন? কেমোথেরাপি দেওয়ার পরে ক্যান্সার রোগীর শরীরে
অনেক উপকার পাওয়া যায়। কেমোথেরাপি দিলে একজন ক্যান্সার রোগীর শরীরে যা ঘটে
সেগুলো হলোঃ-
- আক্রান্ত রোগীর দেহের ক্যান্সার কোষ গুলো ধ্বংস হয়ে যায়। বা হ্রাস প্রায়।
- টিউমারের আকৃতিকে কমিয়ে এনে সংকুচিত করে ফেলে। এবং টিউমারের সরবরাহকৃত রক্তনালিকাগুলোকে ধ্বংস করে।
- ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
- আক্রান্ত ক্যান্সারের লক্ষণ দূর করতে সাহায্য করে।
- কেমোথেরাপি ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ের যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
কেমোথেরাপি কিভাবে দেওয়া হয়
কেমোথেরাপি কিভাবে দেওয়া হয় জানতে পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। কেমোথেরাপি
দেওয়ার নিয়ম হলোঃ- ক্যান্সারের কোষ কলা কে ধ্বংস করার জন্য বিষাক্ত
সাইটো টক্সিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পঞ্চাশটিরও বেশি ধরনের কেমোথেরাপি
রয়েছে। এগুলোর কোন কোনটি ঔষধ ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট আকারে খেতে হয়। বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই এজাতীয় ঔষধ গুলো স্যালাইন বা তরল হিসেবে সরাসরি রক্তের সঙ্গে
দেওয়া হয়। যাতে করে ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষ গুলোকে খুব সহজেই সনাক্ত করতে
পারে এবং কোষগুলো ধ্বংস করতে পারে।
বাংলাদেশের সেরা ক্যান্সার হাসপাতাল
বাংলাদেশের সেরা ক্যান্সার হাসপাতাল গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
- স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চ এন্ড হসপিটাল
- আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল
- ডেলটা হসপিটাল
- ক্যান্সার হোম সার্ভিস সেন্টার,ঢাকা
- স্কয়ার হাসপাতাল
- ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার
- ঢাকা ক্যান্সার এন্ড জেনারেল হসপিটাল
শেষ কথা
আপনি যদি কেমোথেরাপি কি এবং কেমোথেরাপি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে উপকৃত হয়ে
থাকেন তবে অবশ্যই এই পর্বটি বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে
দেবেন। আপনার যদি এই পর্বে কোন মতামত থেকে থাকে তবে কমেন্ট করে জানাবেন এবং
কেমোথেরাপি সম্পর্কে আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করে
জানাবেন।