বাচ্চার জ্বর হলে করণীয়
বাচ্চার জ্বর হলে করণীয় এবং বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে
পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। আপনার বাচ্চার যদি জ্বর আসে তাহলে আপনি ঘরোয়া
উপায়ে জ্বর স্বাভাবিক করতে পারবেন শুধুমাত্র কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে। আজকের
এই পর্বের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানাবো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জ্বর হলে করণীয় কি
এবং বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায় সম্পর্কে।
আপনার ঘরে শিশুর যদি জ্বর আসে এবং যদি ভালো না হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করাবেন। তবে বাচ্চা শরীরে যদি জ্বর হওয়ার লক্ষণ
দেখা দেয় তাহলে আপনি তৎক্ষণাৎ কি করবেন সেই সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
বাচ্চার জ্বর হলে করণীয় এবং বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায় চলুন আলোচনা করা
যাক।
সূচিপত্রঃ বাচ্চার জ্বর কমানোর ১০ টি কার্যকারী উপায়
- বাচ্চাদের জ্বরের সিরাপ
- শিশুর জ্বর ১০২ হলে করণীয়
- বাচ্চাদের জ্বরের এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম
- বাচ্চার জ্বর হলে করণীয়
- বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায়
- টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম
- ৫ বছরের বাচ্চার জ্বর হলে করণীয়
- বাচ্চার জ্বর কমানোর ১০ টি কার্যকারী উপায় - শেষ কথা
বাচ্চাদের জ্বরের সিরাপ
বাচ্চাদের জ্বরের সিরাপ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী খাওয়াবেন। সকল ধরনের ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খাওয়ানো
ঠিক নয়। তারপরও আপনি বাচ্চার যদি সাধারণ জ্বর হয়ে থাকে বা অল্প জ্বর
হয়ে থাকে তাহলে যে কোন ফার্মেসির দোকান থেকে নিচের ওষুধগুলো খাওয়াতে
পারেন। এই ওষুধগুলো শুধুমাত্র বাচ্চার জ্বর স্বল্প অথবা সবে মাত্র জ্বর
আছে এমন সময় খাওয়াতে পারবেন। আপনার শিশুর যদি জ্বরে তাপমাত্রা বেশি
হয়ে যায় তাহলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন। বাচ্চাদের জ্বরের
সিরাপ গুলো হলঃ-
আরো পড়ুনঃ জরায়ু টিউমার - জরায়ু টিউমারের লক্ষণ
প্যারাসিটামল
শিশুদের জ্বর কমানোর জন্য সঠিক মাত্রায় প্যারাসিটামল এবং আইবুপ্রোফেন নিরাপদ
এবং কার্যকরী একটি ঔষধ। শিশুদের জন্য প্যারাসিটামল সাধারণত সিরাপ হিসেবেই
পাওয়া যায়।
নাপা
শিশুদের খাওয়ানোর জন্য নাপা সিরাপ পাওয়া যায়। আপনার শিশুর যদি জ্বরের
মাত্রা কম থাকে এবং জ্বরের বয়স যদি ১ থেকে ২ দিন হয়ে থাকে তবে
এন্টিবায়োটিক না খেয়ে আপনার সন্তানকে নাপা সিরাপ খাওয়াতে পারেন। এক্ষেত্রে
জ্বরটা স্বাভাবিক থাকবে।
প্রথম অবস্থায় প্যারাসিটামল এবং নাপা সিরাপ বাদে অন্য কোন ঔষধ বা সিরাপ
খাওয়ানো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ঠিক হবে না। তবে আপনার সন্তানের জ্বরের বয়স যদি
চার থেকে পাঁচ দিনের বেশি হয়ে যায় অথবা এক সপ্তাহ পার হয়ে যায় তাহলে
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়াতে পারেন। তবে অবশ্যই
এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুর জ্বর ১০২ হলে করণীয়
শিশুর জ্বর ১০২ হলে করণীয় কি অনেকেই জানে না। শিশুর জ্বর যদি ১০২ বা তার
বেশি হয়ে থাকে তবে বেশি দুশ্চিন্তা না করে নিচের পদক্ষেপগুলো যদি ফলো করেন
তাহলে সন্তানের জ্বর কমিয়ে আনতে পারবেন। শিশুর জ্বর ১০২ হলে করণীয় গুলো হলঃ
- অবশ্যই থার্মোমিটার সব সময় আপনার কাছেই রাখতে হবে।
- নিয়মমাফিক প্রতি ৩০ মিনিট পরপর জ্বর মাপতে হবে।
-
বাচ্চা ঘুমানোর সময় জ্বরের পরিমাণটা মাপতে হবে কেননা বাচ্চা ঘুমানোর
সময় ও জ্বর বেড়ে যেতে পারে।
-
জ্বর ১০২ ডিগ্রীর উপরে হলে প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ গুলো খাইয়ে দিতে
পারেন এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানি দিয়ে পাতলা কাপড় ভিজিয়ে কপাল
এবং মাথায় পটি দিতে পারেন।
-
জ্বর ১০২ এবং তার যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে মাথায় পানি ঢালতে হবে এবং
এমন অবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং চিকিৎসা গ্রহণ করে
ওষুধ খাওয়াতে হবে।
- বগলের তলাতে বারবার মুছে দিতে হবে।
-
যতক্ষণ না তাপমাত্র ১০০ ডিগ্রীর নিচে না নামবে ততক্ষণে পানি ঢেলে যেতে
হবে।
-
শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কমে আসলে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যেতে
হবে।
-
এক্ষেত্রে অবশ্যই বাচ্চাকে খাবার স্যালাইন বা রাইস স্যালাইন খাওয়াতে
হবে।
যে বিষয়গুলোর লক্ষ্য রাখা জরুরী
- মুখের ভেতরে, জিব্বা অথবা মাড়িতে ঘা হয়েছে কিনা।
- জলের সঙ্গে নতুন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কিনা অথবা শরীরে হাম বা লুতি বের হয়েছে কিনা।
- পাতলা পায়খানা হচ্ছে কিনা
- চোখের রং হলুদ হয়েছে কিনা
- আপনাকে বুঝতে হবে শিশুর প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া অথবা ব্যথা বা তলপেটে ব্যথা করছে কিনা।
-
শ্বাসকষ্ট, কাঁপুনি নিয়ে জ্বর আসা অথবা ঘাম দিয়ে জ্বর ছড়াচ্ছে কিনা এ
বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন।
-
যদি এগুলো হয়ে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং হাসপাতালে
ভর্তি করবেন।
বাচ্চাদের জ্বরের এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম
এন্টিবায়োটিক এমন একটি ঔষধ যা যেকোনো ধরনের রোগ খুব দ্রুত অপসারিত এবং
ব্যক্তিকে সুস্থ সবল করতে সহায়তা করে। বাচ্চাদের যদি জ্বর আসে তাহলে
বাচ্চাদের জ্বরের এন্টিবায়োটিক প্রথমত খাওয়ানো ঠিক হবে না। আপনার বাচ্চার
জ্বরের বয়স যদি এক সপ্তার উপরে যায় তবে এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে হবে তাও
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বাচ্চাদের জ্বরের
এন্টিবায়োটিক খাওয়ানো ঠিক নয়। তবে বাচ্চাদের জ্বরের এন্টিবায়োটিক
ঔষধের নাম আপনি জেনে রাখতে পারেন। কারণ যে কোন সময় আপনার প্রয়োজনে আসতে
পারে। বাচ্চাদের জ্বরের এন্টিবায়োটিক ঔষধের নাম হলোঃ-
- AZ সিরাপ
- Odazyth সিরাপ
- Zimax সিরাপ
- Ace সিরাপ
- Renova সিরাপ
- Verixim সিরাপ
বাচ্চার জ্বর হলে করণীয়
বাচ্চার জ্বর হলে করণীয় কি অনেকেই জানে না। শিশুদের জ্বর কমানোর প্রধান
উদ্দেশ্য হল শিশুকে স্বস্তি দেওয়া। বাচ্চাদের জ্বর যদি ১০২.২ ডিগ্রি
ফারেনহাইট এর নিচে থাকে এবং শিশু যদি দেশে অসুস্থ না হয়ে যায় অর্থাৎ আগে
থেকেই যদি অন্য কোন রোগে আক্রান্ত কিংবা জ্বর খিচুনি হার্টের অসুস্থতা যদি
না থেকে থাকে তাহলে জ্বর কমানোর জন্য অস্থির হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
এক্ষেত্রে যদি বাচ্চাদের জ্বর তাপমাত্রা বেশি হয়ে যায় তাহলে প্যারাসিটামল
খাওয়াতে পারেন। এছাড়াও বাচ্চাদের জ্বর হলে করণীয় হলোঃ
- বাচ্চাকে খোলামেলা ঘরে রাখতে হবে। যতটুকু সম্ভব হয় কম কাপড়চোপড় পরিধান করাতে হবে এবং শিশু শরীর আলতো ভাবে মালিশ করে দিতে হবে।
- কিছুক্ষণ পরপর পানি পান এবং তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
-
জ্বর কমাতে স্পঞ্জিং কুলিং ব্যাকেট অথবা অন্যান্য পরিপূরক এবং বিকল্প
ওষুধের ভূমিকা নগণ্য।
-
বাচ্চার অতিরিক্ত জল কমিয়ে আনার জন্য জল শোষক অথবা তোয়ালে দিয়ে কুসুম
গরম পানিতে চিবিয়ে পা, পিট, বুক এবং কপাল ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরপর মুছে
দিতে হবে।
-
শিশুদের জ্বর কমানোর জন্য সঠিক মাত্রায় প্যারাসিটামল এবং আইবুপ্রোফেন
থেকে আন্তরিক বাকিদের ক্ষতি আশঙ্কা থাকে।
- কোনভাবেই বাচ্চাকে যদি ওষুধ খাওয়ানো না যায় তাহলে বায়ু পথে সাপোজিটরে প্রয়োগ করতে পারেন।
বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায়
বিভিন্ন উপায়ে আপনি বাচ্চার জ্বর কমাতে পারবেন। বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায়
গুলো নিচে দেওয়া হলঃ-
- দ্রুতভাবে জ্বর কমানোর জন্য বাচ্চার শরীর কুসুম গরম পানি নরম গামছা বা তোয়ালি দিয়ে মুছতে হবে।
-
যদি ১০২ ডিগ্রির উপরে হয়ে যায় তাহলে মাথায় পানি দিতে হবে।
- জ্বর এবং শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়াতে পারেন।
- খাবার স্যালাইন এবং পানি বেশি খাওয়াতে হবে।
- বাচ্চাকে খোলামেলা ঘরে রাখতে হবে। যতটুকু সম্ভব হয় কম কাপড়চোপড় পরিধান করাতে হবে এবং শিশু শরীর আলতো ভাবে মালিশ করে দিতে হবে।
- কিছুক্ষণ পরপর পানি পান এবং তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম
টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম এবং দাম কত যদি জানতে চান তবে এই পর্বটি আপনার
জন্য। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন টাইফয়েড হলে আপনি কি ওষুধ
খাওয়াবেন সেই সম্পর্কে। নিচে টাইফয়েড জ্বরের ঔষধের নাম দেওয়া হলঃ-
- আম্পিসিলিন
- ক্লোরাম্ফেনিকল
- এমোক্সিলিন
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন
উপরের ঔষধ গুলো টাইফয়েড চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ সময়ে
একজন টাইফয়েড রোগীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং খাবার স্যালাইন খেতে
হবে।
৫ বছরের বাচ্চার জ্বর হলে করণীয়
৫ বছরের বাচ্চার জ্বর হলে করণীয় কি অনেকেই জানেনা। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি
জানতে পারবেন পাঁচ বছরের বাচ্চার যদি জ্বর আসে তাহলে কি করনীয় সেই
সম্পর্কে। ৫ বছরের বাচ্চার জ্বর হলে করণীয় গুলো হলঃ-
- AZ সিরাপ
- Odazyth সিরাপ
- Zimax সিরাপ
- Ace সিরাপ
- Renova সিরাপ
- Verixim সিরাপ
বাচ্চার জ্বর কমানোর ১০ টি কার্যকারী উপায় - শেষ কথা
উপরের আলোচনা অনুযায়ী এতক্ষণে আপনি নিশ্চয়ই বাচ্চাদের জ্বর হলে করণীয়
এবং বাচ্চাদের জ্বর কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই পর্ব থেকে
আপনি যদি উপকার পেয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার আশেপাশে বন্ধুদের শেয়ার করে
সবাইকে জানার সুযোগ করে দিবেন। এই পর্বে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তবে
আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।