আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম অথবা আয়রন ট্যাবলেট কিভাবে খেতে হবে যদি জানতে চান তবে এই পর্বটি আপনার জন্য। কেননা আজকের এই পর্বে আমরা আলোচনা করব আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। প্রত্যেকটি ওষুধ বা ট্যাবলেট সেবনের পূর্বে অবশ্যই খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে খেতে হবে। এতে আপনার সেই ট্যাবলেট এর কার্যকারিতা বেশি হবে এবং সাইড ইফেক্ট কম পড়বে।বর্তমানে অনেক ধরনের আয়রন ট্যাবলেট পাওয়া যায় বিভিন্ন ফার্মেসিগুলোতে। তাই এই ট্যাবলেটগুলো খাবার পূর্বে অবশ্যই আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম জেনে খেতে হবে। এই পর্বের মাধ্যমে আজকে জেনে নিন আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম কি।
সূচিপত্রঃ আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
- আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
- আয়রন ট্যাবলেট এর নাম
- আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা
- আয়রন ট্যাবলেট কখন খাওয়া হয়
- আয়রন ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
- ভালো আয়রন ট্যাবলেট এর নাম
- আয়রন ট্যাবলেট এর কাজ
- গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
- শেষ কথা
আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
আপনি নিশ্চয়ই আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম কি জানতে চাচ্ছেন? হ্যাঁ আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। প্রিয় পাঠক আপনি এই পর্বে জানতে পারবেন আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আয়রন হলো রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এটি শরীরে গ্লোবিন ও পর ফিরি্ন নামক চেইন এর সঙ্গে সংমিশ্রিত হয়ে রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। যেটি ফুসফুস এর মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহ করে। তাই অবশ্যই আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার পূর্বে খাওয়ার সঠিক নিয়ম জেনে খেতে হবে। এই পর্বের মাধ্যমে আপনি আয়রন ট্যাবলেট সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
আয়রন ট্যাবলেট এর নাম
সকল কোম্পানির আয়রন ট্যাবলেট এর নাম নিচে আলোচনা করা হবে। আয়রন ট্যাবলেট এর নাম গুলো নিচে দেওয়া হলঃ
- ফেরো প্লাস
- জেনি ফল প্লাস
- ফিওফল সি আই
- ফেরিগান
- ফেরোসিট টি আই
- ফেরোস্প্যান
আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা
আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা কি কি রয়েছে জানতে পারবেন এই পর্বের মাধ্যমে। সকল ধরনের বয়সের লোকের আয়রনের ঘাতটি দেখা দিতে পারে তবে মহিলাদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি। আয়রনের ঘাটটি দেখা দিলে রক্তস্বল্পতা সহ আরো অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই রনের ঘাটি প্রতিরোধ করতে নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া উত্তম। আয়রন ট্যাবলেট এর উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো-
- আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা দূর করা
- গর্ভকালীন সময়ে শিশুর সুস্থ ও সঠিক বিকাশের সহায়তা করা
- মাতৃ মৃত্যু এবং শিশু মৃত্যুর হার কমাতে সাহায্য করে
আয়রন ট্যাবলেট কখন খাওয়া হয়
যেকোনো ওষুধ আপনি যদি অসুখের সময় খান তবে সেটি ভাল কাজ করবে এবং আপনি যদি মাত্রা অতিরিক্ত বা অসময়ে খেয়ে থাকেন তাহলে এটি বিষের মত কাজ করবে। তেমনি আইরন ট্যাবলেট। আইরন ট্যাবলেট যদি আপনি সঠিক সময়ে না খেয়ে অপ্রয়োজনে সময় খেয়ে থাকেন তাহলে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই আয়রন ট্যাবলেট কখন খাওয়া হয় এই নিয়ে আজকে আলোচনা করব। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক আয়রন ট্যাবলেট কখন খাওয়া হয়।
- অপুষ্টি জনিত সমস্যা
- আয়রনের অভাবে রক্তস্বল্পতা
- গর্ভাবস্থায়
আয়রন ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
বর্তমানে সকল ধরনের ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আয়রন ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অবশ্যই রয়েছে। যেগুলো আপনি দিনে দিনে উপলব্ধি করতে পারবেন। আয়রন ট্যাবলেট এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো নিচে দেওয়া হলঃ
- ডায়রিয়া
- এপি গ্যাসটিক এর ব্যথা
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- বমি বমি ভাব
- পেটে খিচুনি
গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
মেয়েদের জন্য সবথেকে সতর্ক নিয়ে সময় হলো গর্ভ অবস্থা। গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম নিয়ম রয়েছে। যে নিয়ম গুলো মেনে এই ট্যাবলেট গুলো খেতে হবে। তা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম মেনে এই ট্যাবলেটগুলো সেবন করবেন। গর্ভের শিশুর সঠিক ও সুস্থ বিকাশ এর জন্য এবং প্রসবকালীন ঝামেলা এড়াতে আয়রনের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি গর্ভবতী মায়ের শরীরের আয়রনের চাহিদা পূরণ করে। এ সময় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
বাজারে আয়রন ও ফলিক এসিড একত্রে আয়রন ফলিক এসিড নামক বিভিন্ন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট মায়ের শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ করে এবং ফলিক এসিড শিশুর ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে এবং বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সহায়তা করে। গর্ভ অবস্থায় আইরন ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিংবা ফ্যামিলি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার এর নির্দেশনা মোতাবেক খেতে হবে। এক্ষেত্রে-
- গর্ভাবস্থার শুরু থেকে প্রসব পরবর্তী তিন মাস পর্যন্ত আয়রনযুক্ত ট্যাবলেট সেবন করতে হবে। প্রতিদিন 60 মিলিগ্রাম আয়রন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হবে।
- যে সমস্ত খাবার শরীরে আয়রন শোষণের হার কমিয়ে দেয় সে টাইপের খাবার গ্রহণ থেকে এড়িয়ে যেতে হবে। যেমন-চা কফি, সয়াবিনযুক্ত খাবার, দুধ ও দুধ্বজাত খাবার, ডিম ইত্যাদি।
- আইরন ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর সঙ্গে কখনোই এন্টাসিড অথবা ক্যালসিয়াম জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। এতে আইরন ট্যাবলেট এর কার্যকারিতা অনেকাংশে কমে যায়। এক্ষেত্রে অ্যান্টাসিড বা ক্যালসিয়াম জাতীয় ঔষধ খাওয়ার অন্তত এক ঘন্টা বা দুই ঘন্টা পরে আইরন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হবে।
- আইরন ফলিক এসিড ট্যাবলেটটি সাধারণত খালি পেটে সবথেকে বেশি কাজ করে। তাই যেকোনো খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা পূর্বে ট্যাবলেটই গ্রহণ করতে পারেন।
- যাদের খাবার গ্রহণের পূর্বে ট্যাবলেট খেলে সমস্যা সৃষ্টি হয় তাদের ক্ষেত্রে খাবার খাবার পরপরই আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া উত্তম।
ভালো আয়রন ট্যাবলেট এর নাম
বাজারে অনেক ধরনের আইরন ট্যাবলেট গুলো পাওয়া গেলেও সকল ট্যাবলেট গুলো বা সকল কোম্পানির ট্যাবলেট গুলো ভালো নাও হতে পারে। ভালো আয়রন ট্যাবলেট এর নাম নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- ফেরো প্লাস
- জেনি ফল প্লাস
- ফিওফল সি আই
- ফেরিগান
- ফেরোসিট টি আই
- ফেরোস্প্যান
আয়রন ট্যাবলেট এর কাজ
আয়রন হলো রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এটি শরীরে গ্লোবিন ও পর ফিরি্ন নামক চেইন এর সঙ্গে সংমিশ্রিত হয়ে রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করে। যেটি ফুসফুস এর মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহ করে।অনেকেই জানতে চাই মূলত আয়রন ট্যাবলেট এর কাজ কি? আপনি যদি আইরন ট্যাবলেটের নাম জানতে চান এবং এই আয়রন ট্যাবলেট এর কাজ কি জানতে চান তবে এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আয়রন ট্যাবলেট এর কাজ গুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- আয়রন এর অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা
- রক্তস্বল্পতা
- প্রিম্যাচিউর বেবি
- স্বাভাবিকের তুলনায় কম ওজনের শিশু
- ব্যবহারিক এবং আচরণগত বিকাশে বাধাগ্রস্ত
- পিকা রোগে হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়
- ক্লান্তি অনুভূত হওয়া
- মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
- শ্বাস নিতে সমস্যা। ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
একজন মেয়ে গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে যে খাবারগুলো খেতে পারে সেগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হল। আইরন সমৃদ্ধ ট্যাবলেট গ্রহণের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় নিয়মিত আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। তবে মনে রাখতে হবে সব সময় আয়রনের চাহিদা পূরণ করতে আইরন সমৃদ্ধ খাবার যথেষ্ট নয়। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার সমূহ-
- রেড মিট-বিশেষ করে গরুও খাসির মাংস
- বিভিন্ন ধরনের ডাল যেমন-ছোলার ডাল, মুগ ডাল, মাসকালাইয়ের ডাল, মসুর ডাল ইত্যাদি
- বাদাম সমূহ(চীনা বাদাম, পেস্তা বাদা্ম, কাজুবাদাম)
- মটরশুটি
- ড্রাই ফুড-খেজুর, কিসমিস, আখরোট, শুকনা নারিকেল ইত্যাদি
- বিল ও নদীর মাছ-টেংরা, চাপিলা, মলা, শিং মাছ ইত্যাদি
- বিভিন্ন ধরনের শাক।
- দুধ ও দুধ জাতীয় খাবার
- ডিম
- বিভিন্ন ধরনের সবজি
- শস্যদানা
- বিভিন্ন ফুল ও ফলের বীজ সমূহ।
শেষ কথা
উপরের আলোচনা অনুযায়ী আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে উপকৃত হয়েছেন যে আয়রন ট্যাবলেট কিভাবে খেতে হবে এবং আয়রন ট্যাবলেট এর কাজ কি। আপনি যদি আজকের এই পর্বটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদের জানিয়ে উপকারে আসবেন। এই পর্বটি আপনার কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন।