কাঠ বাদামের ৮ টি কার্যকারী উপকারিতা জেনেনিন
কাঠ বাদামের উপকারিতা রয়েছে অনেক কিন্তু এই উপকারিতাগুলো আমাদের সকলের অজানা।
অধিকাংশ মানুষই জানে না কাঠ বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে। কাঠ বাদাম খাওয়ার
নিয়ম কি এবং কিভাবে খেলে এর সঠিক কার্যকারিতা পাওয়া যায় সেই সব সম্পর্কে আজকে
আমরা এই পর্বের মাধ্যমে আলোচনা করব। কাঠ বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে রাখুন।
কাঠ বাদামের অনেক ধরনের উপকারিতা থাকলেও অনেকের এটা অজানা রয়েছে। প্রতিনিয়ত
কাঠবাদাম খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শরীরের জন্য অনেক উপকারে
আসবে। কার্ড বাদামের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা নিয়ে
আজকের পর্বটি। নিচে কাঠ বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
সূচিপত্রঃ কাঠ বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
- প্রতিদিন কয়টা কাঠবাদাম খাওয়া উচিত
- কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম
- কাঠ বাদামের উপকারিতা
- কাঠবাদামের অপকারিতা
- কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক
- কাঠ বাদাম এর দাম
- কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- শেষ কথা
প্রতিদিন কয়টা কাঠবাদাম খাওয়া উচিত
প্রতিদিন কয়টা কাঠবাদাম খাওয়া উচিত এটা হয়তো অনেকের অজানা রয়েছে।
প্রতিদিন আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে কাঠ বাদাম খান তাহলে আপনার
স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি হবে। তাই অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মমাফিক একটি নির্দিষ্ট
সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ বাদাম খাওয়া উচিত। প্রতিদিন কয়টা কাঠবাদাম খাওয়া
উচিত তা নিয়েছে উল্লেখ করা হলোঃ
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
একটি মানুষের প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ৫ থেকে ৬ টি কাঠবাদাম ভিজিয়ে
খাওয়া উচিত। আপনি যদি প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খান তাহলে
মস্তিষ্কের কাজের উন্নতি ঘটবে। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে
আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় উপকারী ফ্যাট উৎস হিসেবে কাঠ বাদাম বিশেষ ভূমিকা পালন
করবে। দুরন্ত শিশুদের বুদ্ধি বিকাশে কাঠ বাদাম অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে। এছাড়াও কাঠবাদামের আলঝেইমার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম
মানবদেহের সুস্থ থাকার জন্য ডায়েটের অংশ হিসেবে একজন মানুষের পরিমাণ মতো বাদাম
এবং বীজ জাতীয় খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক নিয়মে কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা
অনেক। শুধুমাত্র যে কাঠবাদাম খেলে আপনার শরীরে উপকার আসবে এমন কিন্তু নই।
কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম রয়েছে এই নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনি কাঠবাদাম খান তবে
আপনার শরীরে উপকার আসবে। কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম হলঃ
আরো পড়ুনঃ জাফরান এর দাম বাংলাদেশ - জাফরান এর উপকারিতা
সব থেকে উত্তম ভাবে কাঠ বাদাম খাওয়া হলো সারা রাত ভিজিয়ে রেখে। আপনি যদি
কাঠবাদাম গুলো সারারাত ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন তবে সবথেকে ভালো কাজ হবে।
কাঠবাদাম সারারাত ভিজিয়ে খাওয়ার সব থেকে বড় উপকারিতা হলো কাঠ বাদামের ভেতরে
থাকা যাবতীয় খনিজ উপাদান গুলো সহজেই শরীরে গ্রহণ করতে পারে।
- এক কাপ বড় বাটিতে দুই কাপ পানি নিতে হবে।
- বাটির মধ্যে এমনভাবে পানি দিবেন যেন বাদামের দুই অংশই উপরে থাকে।
- এরপরে সামুদ্রিক লবণ পানির মধ্যে দিয়ে কিছু সময় নেড়ে নিতে হবে।
- 12 থেকে 14 ঘন্টা লবণ পানির মধ্যে রাখতে হবে এবং পরবর্তীতে খাবার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
-
কাঠবাদাম গুলো রোদে দিয়ে ভালোভাবে শুকিয়ে নিবেন লক্ষ্য রাখবেন একটু যেন
ভেজা না থাকে।
-
সর্বশেষ এয়ারটাইট বক্সে রেখে নিয়মিত খেলে কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ অধিক
পরিমাণে পাওয়া যায়।
কাঠ বাদামের উপকারিতা
বর্তমানে কাঠবাদাম খেতে অনেকেই ভালোবাসে। তবে অনেকেই কাঠ বাদামের উপকারিতা
সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেনা। অনেকের মধ্যে আবার এমন ধারণা রয়েছে যে কাঠ বাদাম
খেলে ওজন বাড়ে। এ ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল কেননা আপনি যদি ডায়েট করার জন্য
নিয়মিত কাঠবাদাম খান তাহলে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। আপনি যদি কাঠবাদাম
স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে চান তাহলে এটি অনেক কার্যকরী। কাঠ বাদামে রয়েছে ভিটামিন
ই, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস জিংক, কপার, ম্যাগনেসিয়াম ও আইরন।
কাঠবাদাম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে এবং শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা
থাকলে তা কমিয়ে আনে। আবার হৃদরোগের ঝুঁকি এবং রক্তস্বল্পতা দূর করতে কাঠবাদাম
অনেক কার্যকারী একটি উপাদান। কাঠবাদাম ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক ভালো ভূমিকা
পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন কেউ যদি এক মুঠ করে বাদাম খায় তাহলে উপরের
উপকারগুলো পেতে সাহায্য করবে এছাড়াও কাঠ বাদামের উপকারিতা গুলো নিচে উল্লেখ
করা হলোঃ-
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
কাঠ বাদামে থাকা পুষ্টিগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। কাঠ বাদাম
মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি পুষ্টি গুণ হলো রিবোফ্লাভিন এবং এল কেরনিটেন।
উক্ত উপাদান গুলো মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং স্মৃতি
ভ্রম এক কথায় স্মৃতিশক্তির রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। একজন মানুষের
দেহের জন্য প্রয়োজনে অবকারে সকল ফ্যাটের উৎস হিসেবে কাঠ বাদাম বড় ভূমিকা পালন
করে। দুরন্ত শিশুদের বৃদ্ধি বিকাশের জন্য কাঠবাদাম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
এছাড়াও কাঠবাদামের আলঝেইমার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ
কাঠবাদামে থাকা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে এবং কাঠ বাদাম
কোলনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
কাঠ বাদাম হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
নিয়মিত কেউ যদি ভেজানো কাঠবাদাম খায় তাহলে তার হার্ট ভালো থাকবে। কেননা
কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম প্রোটিন জাতীয়
উপাদান। যা কিনা হার্টের কর্ম সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও
কাঠবাদামের রয়েছে ভিটামিন ই যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ও ম্যাগনেসিয়াম হার্ট
এটাক থেকে রক্ষা করে এবং প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। প্রতিনিয়ত বাদাম খাওয়ার
ফলে হৃদ যন্ত্র ভালো থাকবে ও ৫৫% হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে ফেলবে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ
কাঠবাদাম ইনসুলিন মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে খাবারের
পর কেউ যদি কাঠবাদাম খায় তাহলে ইনসুলিনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে।
উচ্চ রক্তচাপ
কাঠ বাদামে থাকা ফসফরাস উচ্চ রক্তচাপ কম নিয়ন্ত্রণ করে রাখে। কাঠ বাদামের
মধ্যে থাকা সোডিয়াম রক্তচাপের জন্য খুবই উপকারী কেননা এটি রক্তচাপের ওঠা নামা
নিয়ন্ত্রণ করে রাখে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ
কাঠবাদাম খাওয়ার পরে খিদে কম লাগে। যার কারণে মাত্রা অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার
কোন প্রয়োজন হয় না। আবার শরীরে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ক্যালোরি জমে থাকে যা
ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনাও কমে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা
কাঠ বাদামের জন্য শরীরে মধ্যে থাকা খারাপ কলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
প্রতিদিন ডায়েটে কেউ যদি বাদামের অন্তর্ভুক্ত হয় তাহলে হার্টের স্বাস্থ্য
নিয়ে আর কোন চিন্তা করতে হবে না তাকে। কাঠ বাদামের উপস্থিতিতে বেশ কিছু
কার্যকর উপাদান শরীরের ভেতরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলে। যার
কারণে স্বাভাবিকভাবে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। এছাড়াও
কাঠবাদামের রয়েছে প্রচুর পরিমাণ মনো স্যাসুডেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও ওমেগা ৬
ফ্যাটি এসিড। যার কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে যায়।
হাড় এবং দাঁত ভালো রাখতে সহায়তা করে
কাঠ বাদামে রয়েছে ফসফরাস, মিনারেল এবং ভিটামিন যা হাড় এবং দাঁতকে সুরক্ষা
করে। ফসফরাস শুধুমাত্র যে হার এবং দাঁত কেই মজবুত করে এমন কিন্তু নয় এটি
অস্টিওপোরোসিস অথবা হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। হার এবং দাঁতের
সুস্বাস্থ্য ও স্থায়িত্বের জন্য ফসফরাসের ভূমিকা ও করেছেন। বয়সের কারণে হাড়
এবং দাঁতের সমস্যা তৈরি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে ফসফরাস।
কাঠবাদামের অপকারিতা
কাঠ বাদামের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কাঠবাদামের অপকারিতা ও রয়েছে। কাঠ
বাদামের মানসিক ও শারীরিক অপকারিতা গুলোর নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
- এলার্জিঃ আপনার যদি অ্যালার্জি থেকে থাকে তাহলে কাঠবাদাম আপনার জন্য ভয়ানক হবে।
- গঠনশীলতাঃ কাঠ বাদামের গঠনশীলতার মানে হলো এর কঠিন পালিশ অথবা খাদ্যবান্ধব পরিবেশ ধ্বংস করা।
-
অতিরিক্ত সাঁতারঃ কাঠ বাদাম অতিরিক্ত সাঁতার খাদ্য বান্ধব সংগ্রহ
যোগ্যতা কমিয়ে আনতে পারে। অতিরিক্ত সাঁতার পরিবেশ প্রদূষণের ক্ষতিকারক
হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
-
এনজাইম সংক্রান্তঃ অনেকের ক্ষেত্রে কাঠবাদাম এঞ্জাইম সমস্যা হতে
পারে। যার ফলে পাচনা তন্ত্র সমস্যার উৎপন্ন হতে পারে।
কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক
কাঠ বাদামের ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। তবে সবার জন্য কাঠ বাদামের ক্ষতিকার দিক নাও
থাকতে পারে। যে কোন ধরনের বাদামে যেকোনো ধরনের এলার্জি থাকলে কাঠ বাদাম এড়িয়ে
চলায় উত্তম। এলার্জির কারণে শরীরে চুলকানি এবং ত্বকের বিভিন্ন অংশের ফুলে
যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট মত সমস্যা যাদের হয় তাদের আরো বেশি সাবধানে থাকতে হবে।
এরা যদি কাঠবাদাম খায় তাহলে সমস্যা সমাধানের থেকে আরও বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে। এ
সকল সমস্যাগুলো একসঙ্গে যদি দেখা যায় তাহলে তাকে বলা হয়
অ্যানাফিল্যাক্সিস যার কারণে প্রাণঘাতীও হতে পারে।
কাঠ বাদাম এর দাম
কাঠ বাদাম এর দাম অনেকেই জানেনা। বর্তমান সময়ে কাঠবাদাম অনেক জনপ্রিয় একটি
খাদ্য উপাদান। মানুষ বিভিন্ন উপকারের কথা চিন্তা করে বর্তমানে কাঠবাদাম খাচ্ছে।
কেননা কাঠবাদামের রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টিকর উপাদান যা শরীরের জন্য অনেক
উপকারে আসে। বাংলাদেশে এক কেজি কাঠবাদামের সর্বনিম্ন মূল্য হল ৮৫০ টাকা। তবে এই
মূল্য বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দামে
বিক্রি করতে পারে। তবে কাঠবাদাম ক্রয় করার পূর্বে অবশ্যই ভালো খারাপ দেখে
ক্রয় করবেন।
কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা সব থেকে বেশি। কাঠবাদাম খালি খাওয়া অথবা
অন্যান্য যে কোন ভাবে খাওয়ার থেকে সব থেকে ভালো এবং উপকারে আসে ভিজে খাওয়ার
মাধ্যমে। কাঠবাদাম যদি আপনি ভিজিয়ে খান তাহলে কাঠ বাদামের সঠিক উপাদান এবং
কার্যকারিতা গুলো আপনি গ্রহণ করতে পারবেন। আপনি যদি কাঠবাদাম স্ন্যাক্স
হিসেবে খেতে চান তাহলে এটি অনেক কার্যকরী। কাঠ বাদামে রয়েছে ভিটামিন ই,
ক্যালসিয়াম, ফসফরাস জিংক, কপার, ম্যাগনেসিয়াম ও আইরন। আপনি যদি সারারাত
কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খান তাহলে অতিরিক্ত উপকার পাবেন।
শেষ কথা
উপরের আলোচনা অনুযায়ী আপনি নিশ্চয়ই কাঠবাদামের কার্যকারিতা এবং অপকারিতা
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আজকের এই পর্ব থেকে আপনি যদি উপকার পেয়ে থাকেন এবং
কাঠবাদামের বিভিন্ন উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে যদি জেনে থাকেন তবে অবশ্যই
এই পোস্টটি শেয়ার করে আপনার নিকটস্থ সকল বন্ধুদের জানার সুযোগ করে দেবেন। কাঠ
বাদাম সম্পর্কে আপনার যদি কোন মন্তব্য থাকে তবে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে
পারেন।