জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
প্রিয় পাঠক, আপনি যদি জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং জার্মানিতে যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে আমাদের আজকের এই পর্বটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আমাদের আজকের এই পর্বে আমরা জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি এবং জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে এ বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি আমরা আরো জানবো বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়, জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন কত এবং জার্মানিতে কাজের সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জার্মানিতে কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
পোস্ট সূচিপত্রঃ জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি-জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে
- জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে
- জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন কত
- জার্মানি ভিসা আবেদন করার নিয়ম
- বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
- জার্মানি যেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়
- বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে
- জার্মানির ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে
- শেষ কথা
জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অনেকেই কাজের উদ্দেশ্যে জার্মানিকে পছন্দের তালিকায় রেখেছেন। যারা কাজের উদ্দেশ্যে জার্মানিতে পাড়ি দিতে চাচ্ছেন তাদের প্রথমেই জেনে নিতে হবে জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে আপনার যদি পূর্বেই ধারণা থেকে যায় তাহলে সেই দেশে গিয়ে আপনি কাজ শুরু করতে কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি।
- ডাক্তার
- মেডিকেল ক্লিনার
- শপিংমল ক্লিনার
- ফুড প্যাকেজিং
- ফুড ডেলিভারি
- হোটেল বয়
- রেস্তোরাঁ
- ড্রাইভিং
- মেকানিক্যাল
- ওয়েল্ডিং ও
- কনস্ট্রাকশন
- নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
- কম্পিউটার অপারেটর
- সিকিউরিটি গার্ড। ইত্যাদি।
জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে
১৬ দিয়ে অঙ্গরাজ্য নিয়ে জার্মানি হচ্ছে ইউরোপের বুকে গড়ে ওঠা সংযুক্ত ইউনিয়ন. বর্তমান সময়ে একজন বাংলাদেশী শ্রমিক বাৎসরিক ২৪ লক্ষ বা তার বেশি টাকা ইনকাম করে জার্মানিতে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় জার্মানিতে পারিশ্রমিক বেশি হওয়ায় সবার পছন্দনীয় দেশ হলো জার্মানি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের অসংখ্য মানুষ জার্মানিতে কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে এবং বসবাস শুরু করেছে।আপনি যদি লেখাপড়া, বিভিন্ন পেশা বা শ্রমিক হিসেবে জার্মানিতে যেতে চান তাহলে আপনাকে জানতে হবে জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে।
মূলত জার্মানিতে যেতে কত টাকা লাগে এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনি কোন পেশায় যেতে চাচ্ছেন তার ওপর। আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় শিক্ষার জন্য জার্মানি যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ছয় থেকে আট লক্ষ টাকা। আবার আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে জার্মানি যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার খরচ পড়বে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা। আশা করি সম্পূর্ণ বিষয় বুঝতে পেরেছেন।
জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন কত
জার্মানিতে শ্রমিকের মূল্য অত্যন্ত বেশি হওয়ায় অনেকের পছন্দের শীর্ষে তালিকায় রয়েছে জার্মানির নাম। এখানে বিভিন্ন পেশায় আপনি যোগদান করতে পারবেন এবং মোটা অংকের একটা টাকা স্যালারি হিসেবে পাবেন।
জার্মানির মুদ্রার নাম ইউরো। জার্মানিতে একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন হলো 12 ইউরো। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৪৮২ টাকা। আপনি যদি এক দিনে জার্মানিতে ৮ ঘণ্টা কাজ করেন সে ক্ষেত্রে আপনার আয় হবে ৯৬ ইউরো। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ 11 হাজার 542 টাকা। তাহলে বুঝতেই পারছেন একজন বাংলাদেশী শ্রমিক সর্বনিম্ন জার্মানিতে মাসে কত টাকা ইনকাম করতে পারে।
জার্মানি ভিসা আবেদন করার নিয়ম
ঐতিহ্য ও শিক্ষা সংস্কৃতিতে ভরপুর দেশ জার্মানি। অনেক দেশের নাগরিকই বর্তমান সময়ে জার্মানিতে স্থায়িত্ব নাগরিকের আশায় মজেছেন। উন্নত অর্থনীতির দেশ হওয়ায় আবার অনেকের প্রথম পছন্দ জার্মানি। এক্ষেত্রে বৈধ বা যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেউই জার্মানি ভিসা পাবেন না বা যেতে পারবেনা।
জার্মানিতে কয়েকটি ভিসা চালু রয়েছে যেমন-স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা। কর্মসংস্থানের সুযোগ, উদ্যোক্তা ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং জার্মান ভাষায় সর্বনিম্ন দক্ষতা থাকতে হবে। জার্মানিতে পাঁচ ধরনের ভিসা পদ্ধতি রয়েছে। যার প্রত্যেকটির আবেদন করার এবং মাধ্যম রয়েছে। চলুন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
আপনি যদি একজন দক্ষ কর্মী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য জার্মানি সর্বোচ্চ কাজের সুযোগ প্রদান করছে। স্বপ্নের এই দেশটিতে আপনি বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারবেন। কোন কোম্পানিতে কাজ কিংবা নিজের ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা জার্মানিতে ব্যবহার করতে পারবেন। ওয়ার্ক পারমিট ভিসাই রয়েছে জার্মানিতে থাকা এবং কাজ করার অনুমতি। এক্ষেত্রে আপনি যে কোম্পানির অধীনে কাজ করতে চাচ্ছেন সে কোম্পানির অফার লেটার আপনাকে সঙ্গে নিতে হবে।
জার্মানিতে প্রায়ই দক্ষ জনবল এর প্রয়োজন হয় এ ক্ষেত্রে জার্মান সরকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা চালু রেখেছে যার ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের দক্ষ কর্মশক্তি জার্মানিতে গিয়ে কাজ করতে পারেন। জার্মানিতে ভালো কাজের পাশাপাশি উপযুক্ত পরিমাণ বেতন প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট কাজের ওপর যোগ্যতা থাকতে হবে। যদি আপনার নির্দিষ্ট কাজের ওপর প্রশিক্ষণ সনদ থাকে এবং ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় ভালো স্কোর থাকে তাহলে তা আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে আরো সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে আপনাকে যে ধরনের কাজ কাগজপত্র প্রয়োজন হবে এগুলো হলো-
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- বিভাগীয় চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত সনদপত্র
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য নূন্যতম সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট থাকতে হবে
- জার্মান ভাষায় ন্যূনতম জ্ঞান। ইত্যাদি।
জব সিকার ভিসা
এই ভিসার মাধ্যমে দক্ষতা সম্পন্ন যে কোন ব্যক্তি জার্মানিতে গিয়ে চাকরি করার অনুমতি পাবেন। তবে এর একটি শর্ত রয়েছে। এই ভিসার মেয়াদ ৬ মাস আপনি যদি এই ছয় মাসের মধ্যে কোন চাকরি বা কর্মসংস্থান যোগাড় করতে পারেন তাহলে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রূপান্তরিত হবেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি ছয় মাসের মধ্যে কাজ জোগাড় করতে না পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে নিজ দেশে ফিরে আসতে হবে।
শিক্ষার্থী ভিসা
যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য ভালো মানের দেশ খুঁজছেন তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে জার্মানি। জার্মান সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা চালু রেখেছে। আপনি যদি উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানি যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসায় আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি অর্থ আই ও করতে পারবেন। ভিসা মাত্র 15 থেকে 30 দিনের মধ্যেই পাওয়া যায়। তবে এর মেয়াদকাল মাত্র তিন মাস।
তবে এই কয় মাসে যদি তার শিক্ষা সম্পূর্ণ শেষ না হয় সেক্ষেত্রে রেসিডেন্স পারমিট এর অনুমতি প্রদান করা হবে। এছাড়াও শিক্ষাকাল শেষ করার পরে আপনাকে কিছু সময়ের জন্য রেসিডেন্স পারমিট করা হবে চাকরি খোঁজার জন্য। এরপরে আপনি যদি একটি চাকরি জোগাড় করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রদান করা হবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নির্ধারিত পরিমান অর্থ পেমেন্ট করতে হবে।
অভিবাসন ভিসা
আপনি যদি অত্যান্ত ব্যবসায়িক আইডিয়া নিয়ে জার্মানিতে উদ্যোক্তা হিসেবে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অভিবাসন ভিসাই এপ্লাই করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে জার্মানিতে ব্যবসা চালু করার মত অর্থনৈতিক সামর্থ্য থাকতে হবে। আপনার সর্বনিম্ন 10 লাখ ইউরো থাকতে হবে। এবং কমপক্ষে ১০ জন জার্মান নাগরিককে আপনার প্রতিষ্ঠানে চাকরি প্রদান করতে হবে।
ফ্যামিলি স্পন্সরশীপ ভিসা
আপনি যদি কোন জার্মানি বাসিন্দার পরিবারের একজন সদস্য হয়ে থাকেন বা তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ফ্যামিলি স্পন্সারশীপ ভিসা গ্রহণ করতে পারবেন। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে আপনার বয়স ১৬ বছরের নিচে হতে হবে যদি এর বেশি হয় তাহলে আপনাকে জার্মান ভাষায় দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে।
টুরিস্ট ভিসা
ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য জার্মানি অত্যন্ত সুন্দর একটি জায়গা। এক্ষেত্রে মাত্র ১৫ দিনেই আপনি ভিসা পেয়ে যাবেন। যারা ফ্যামিলি নিয়ে কিংবা সময় কাটাতে জার্মানিতে যেতে চান তারা খুব সহজেই টুরিস্ট ভিসায় জার্মানি যেতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
ইউরোপের শক্তিশালী অর্থনীতি ও অভিবাসীদের উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা ও চাকরি এবং কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এসেছে জার্মানি। এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশগুলো নাগরিকত্ব লাভের আশায় জার্মানিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জার্মানি যেতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয়
জার্মানি ভিসার জন্য আবেদন করার পর আপনার যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সেগুলো হল-
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- নির্দিষ্ট কাজের ওপর দক্ষতার সার্টিফিকেট
- চেয়ারম্যানের সত্যায়িত সনদ
- ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- সর্বনিম্ন ছয় মাস মেয়াদী বৈধ পাসপোর্ট।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে
বাংলাদেশ থেকে জার্মানির দূরত্ব ৭২৮৮ কিলোমিটার হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে জার্মানির যেতে প্রায় 18 থেকে 25 ঘন্টা মতো সময় বিমান পথে দিতে হয়।
জার্মানি ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে
জার্মানি ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে তা নির্ভর করবে আপনি কোন বিষয়ে জার্মানিতে যেতে চান তার ওপর। তবে যে কোন ভিসাতেই সর্বোচ্চ 25 থেকে 30 দিন সময় লাগতে পারে।
শেষ কথা
উপরের আলোচনা অনুযায়ী আপনি নিশ্চয়ই জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি জানতে পেরেছেন।এই পর্ব থেকে আপনি যদি কিছু জানতে পারেন এবং উপকৃত হোন তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দেবেন।