কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা

অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন কমলা আমরা ফল হিসেবে খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা জানি কি কমলার খোসাতেও রয়েছে পুষ্টিগুণ। কমলা খাওয়ার পরে আমরা প্রায়ই এর খোসা ফেলে দেই। তবে এর খোসাগুলো সংরক্ষণ করে উপযুক্ত উপায়ে ব্যবহার করতে পারলে এর থেকে বিভিন্ন উপকারিতা পাওয়া যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা

পোস্ট সূচিপত্রঃ কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা

  • কমলার খোসার ব্যবহার
  • কমলার খোসার উপকারিতা
  • রূপচর্চায় কমলার খোসার উপকারিতা
  • চুলের যত্নে কমলার খোসার ব্যবহার
  • খাবারে কমলার খোসার ব্যবহার
  • কমলার খোসার অপকারিতা
  • শেষ কথা

কমলার খোসার ব্যবহার

আমরা বিভিন্ন কাজে কমলার খোসা ব্যবহার করতে পারি। এটি বিভিন্ন প্রকার পুষ্টিগুণে ভরপুর। ও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট। তাহলে চলুন কমলার খোসার ব্যবহার সমূহ জেনে নেই-
  • রূপচর্চায় কমলার খোসার ব্যবহার
  • কমলার খোসার পাউডার
  • কমলার খোসার ফেসপ্যাক
  • কমলার খোসার চা
  • চুলের যত্নে কমলার খোসার ব্যবহার
  • কমলার খোসার স্কিন টোনার। ইত্যাদি।

কমলার খোসার উপকারিতা

  • কমলার খোসাতে কমলার থেকেও বেশি পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। যা আমাদের শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।
  • কমলার খোসায় বিদ্যমান পলিফেনাল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • কমলার খোসায় বিদ্যমান পুষ্টিগুণ স্থূলতা রোধ করতে সাহায্য করে।
  • কমলার খোসায় বিদ্যমান এ্যাসেন্সিয়াল অয়েল স্কিন ক্যান্সার রোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
  • কমলার খোসায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের বা হজম ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কমলার খোসা সাহায্য করে
  • বয়সের ছাপ কমাতে এবং মুখের কালো ভাব দূর করতে কমলার খোসা অত্যন্ত উপকারী।
  • ত্বকের ব্রণ দূর করতে কমলার খোসা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে।
  • ত্বককে মশ্চারাইজ করতে কমলার খোসা অত্যন্ত কার্যকর।
  • চুলের যত্নে কমলার খোসার ব্যবহার না বললেই না।
  • চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে কমলার খোসা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বা এন্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে।
  • চুলকে প্রাকৃতিক উপায়ে সিল্কি করতে কমলার খোসা বেশ উপকারী।
  • নিয়মিত কমলার খোসার চা খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে।

রূপচর্চায় কমলার খোসার উপকারিতা

প্রাচীনকাল থেকেই নিম ও হলুদের মতোই রূপচর্চায় কমলায় খোসার ব্যবহার করে আসছেন রূপ সচেতন রমণীগণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে রূপচর্চায় কমলার খোসা ব্যবহার করবেন।
প্রথমে কমলার খোসা গুলো সংরক্ষণ করে ভালো মতো পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিন। এরপর এগুলো প্রকৃতিকভাবে রোদে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন। এবার এগুলো করে একটি পাত্রে সংরক্ষণ করুন। এটি আপনি কিছুদিন পরপর রোদে দিয়ে সারা বছর ব্যবহার করতে পারবেন। এই গুড়ার সঙ্গে অন্য যে কোন উপাদান ব্যবহার করে আপনি মুখে ফেস প্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন-নিম পাতা, মধু ও কমলার খোসার ফেসপ্যাক। কমলার খোসা ও চন্দনের ফেসপ্যাক। কমলার খোসা, ময়দা ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক। ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি কমলার খোসা টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের যত্নে কমলার খোসার ব্যবহার

আপনারা অনেকেই শুনে অবাক হবেন যে চুলের জন্যও কমলার খোসা অত্যন্ত উপকারী। চুলের এটি আপনার চুলের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এটি অকাল চুলপড়া রোধ করতে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে এবং খুশকি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। কিছুটা কমলার খোসার গুঁড়ো নিয়ে এর সঙ্গে নারকেল তেল মিশিয়ে মাথায় মাসাজ করুন। ঘন্টাখানেক পর ভালো মত শ্যাম্পু করে নিন। চুলের উজ্জ্বলতার পরিমাণ লক্ষ্য করতে পারবেন। এছাড়াও প্যাক হিসেবে কমলার খোসার গুড়া চুলে ব্যবহার করতে পারেন।

খাবারে কমলার খোসার ব্যবহার

কমলার খোসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা মূলত কমলার থেকেও বেশি পরিমাণে। তাই আপনি যদি আপনার খাবারে কমলার খোসা ব্যবহার করেন এটি আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করবে। এটি শিশু ও বয়স্ক উভয়ের জন্যই সমানভাবে উপকারী। এক্ষেত্রে ভাতের সঙ্গে, ডালের সঙ্গে বা সালাদের ডেকোরেশনে আপনি কমলার খোসা কিছুটা পরিমাণ রাখতে পারেন। এতে করে ভিটামিন এ চাহিদা পূরণ হবে। এছাড়াও কমলার খোসার চা বানিয়ে খেতে পারেন। কমলার খোসা গুড়া করে পানি বা লেবুর রসের সঙ্গে কিছুটা মধু মিশিয়ে খেলে অনেকটা উপকার পাওয়া যাবে। এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এবং রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি ওজন হ্রাস করতে বেশ উপকারী।

কমলার খোসার অপকারিতা

প্রত্যেক জিনিসেরই উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়। ক্ষেত্রে আমাদের সব সময় সচেতন থাকতে হবে। কমলার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। এখন কমলার খোসার অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণ কমলার খোসা খেলে বমি বমি ভাব বা পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই পরিমাণ মতো খাওয়াই শ্রেয়।

শেষ কথা

কমলার খোসা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং ভিটামিনের ভরপুর। এর পুষ্টিগুণ অনেক। এটি আমরা বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করতে পারি। আপনি যদি নিয়ম মেনে কমলার খোসা ব্যবহার করেন তাহলে অনেক উপকৃত হবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url