খেজুরের উপকারিতা-আজোয়া খেজুরের উপকারিতা
খেজুর মিষ্টি জাতীয় একটি খাবার। আমরা রমজান মাসে প্রায় খেজুর ব্যবহার করে থাকি। তবে সারা বছরই খেজুর খাওয়া উত্তম। কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন অন্তত তিন থেকে চারটি খেজুর খাওয়া উচিত। শরীরের সাধারণ দুর্বলতা থেকে শুরু করে ক্যান্সার প্রতিরোধেও রয়েছে খেজুরের অবিশ্বাস্য ভূমিকা।
পোস্ট সূচিপত্রঃ খেজুরের উপকারিতা-
- খেজুরের পুষ্টিগুণ
- খেজুরের উপকারিতা
- খেজুরের উপকারিতা
- আজওয়া খেজুরের উপকারিতা
- পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা
- খুরমা খেজুরের উপকারিতা
- মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা
- কাঁচা খেজুরের উপকারিতা
- শুকনো খেজুরের উপকারিতা
- আজওয়া খেজুরের উপকারিতা হাদিস
- শেষ কথা
খেজুরের পুষ্টিগুণ
মিষ্টি জাতীয় এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি। ফসফরাস, সোডিয়াম, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, জিংক, ভিটামিন বি৬ ও কার্বোহাইড্রেট। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
ভিটামিনঃ
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ ও ভিটামিন বি৩ এবং ভিটামিন বি৫ রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও ভিটামিন সি আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে এবং ভিটামিন কে এর চাহিদা পূরণ করে।
প্রোটিনঃ
আপনি জেনে অবাক হবেন যে খেজুরের প্রায় মাংসের সমপরিমাণ প্রোটিন রয়েছে যা আমাদের শরীর গঠনে সহায়তা করে।
ক্যালসিয়ামঃ
খেজুর রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম যা আমাদের শরীরের হার ও দাঁত গঠনে অত্যন্ত উপকারী। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এবং বয়স্ক মহিলাদের জন্য এটি অত্যান্ত কার্যকরী। বয়স্ক মানুষের খাবারের প্রতিদিন তিন থেকে চারটি খেজুর দেওয়া উচিত কারণ তাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে যায়।
ফাইবারঃ
গবেষণায় দেখা গিয়েছে খেজুরে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার রয়েছে যেটি আমাদের হজম ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেজুর খেলে পেটের বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
ক্যালোরিঃ
প্রতিদিন সকালে দুই থেকে তিনটি খেজুর খেলে আপনি সারাদিন কাজ করার সমপরিমাণ ক্যালোরি পাবেন। খেজুর হলো ক্যালরির অন্যতম উৎস।
কোলেস্টেরলঃ
খেজুরের কোন প্রকারের কোলেস্টেরল বা ফ্যাট থাকে না যার ফলে এটি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেন। যারা ডায়েট করছেন তাদের জন্য এটি বেশ উপযোগী। এটি আপনার ওজন বাড়াবেন না সাথে আপনাকে কাজ করার ক্ষমতা হিসেবে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালরি প্রদান করবে।
আইরনঃ
মানবদেহের জন্য আইরন বিশেষ একটি উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিশেষ করে মহিলাদের আইরনের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে আইরনের অভাবে রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। তাই কিশোরী ও মহিলাদের প্রতিদিন খেজুর খাওয়া উত্তম। এছাড়াও এটি স্বাভাবিক দুর্বলতা কাটাতে এবং হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
খেজুরের উপকারিতা
- আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি প্রদান করে। যা আমাদের কাজ করার ক্ষমতা যোগায়।
- পানিসূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
- হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- খেজুরের বিদ্যমান ক্যালসিয়াম হার ও দাঁতকে মজবুত করে। এবং ক্যালসিয়াম ঘাঁটিজনিত সমস্যা দূর করে।
- সোডিয়াম ও পটাশিয়াম এর ভারসাম্য রক্ষাতে খেজুরের তুলনা অপরিসীম।
- খেজুরের বিদ্যমান ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হজম ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- খেজুরে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনির নামক হরমোন উৎপাদন করে। যা আমাদের মানসিকভাবে প্রফুল্লতা প্রদান করে এবং মনকে ভালো রাখে।
- স্বাভাবিক দুর্বলতা দূর করতে খেজুর অত্যন্ত কার্যকর।
- খাবারের অরুচি দূর করে।
- খেজুরের বিদ্যমান ভিটামিনসমূহ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যা শরীরে ভিটামিন এর চাহিদা পূরণ করে এবং ভিটামিন জনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
- খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খেজুরের তুলনা নেই।
- রক্ত শুন্যতা দূর করতে খেজুরে থাকা আইরন বিশেষভাবে কাজ করে।
- পুরুষদের পুরুষত্ব ও যৌবন ধরে রাখতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
খেজুরের অপকারিতা
আমরা জানি যে খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খেজুর খাওয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন গর্ভকালীন সময়ে খেজুর খেলে হজমে কিছুটা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও যাদের হজমে অসুবিধা রয়েছে তাদের খেজুর খাওয়ায় উচিত নয়। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেজুর খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। এবং যাদের শরীরে পটাশিয়াম এর লেভেল বেশি তারা খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হোন।
আজওয়া খেজুরের উপকারিতা
বিজ্ঞানীদের মতে গবেষণায় দেখা গিয়েছে। আজোয়া খেজুরে রয়েছে-শর্করা, আমিষ, স্বার্থপর ফ্যাট ও ফাইবার। এছাড়াও এতে রয়েছে বিভিন্ন খাদ্য পুষ্টিগুণ, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ও আয়রন। এছাড়াও রয়েছে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। আজওয়াক খেজুরের গুরুত্বপূর্ণ ক্যারোটিন নামক উপাদান চোখকে সুস্থ রাখতে অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও আজোয়া খেজুরের আরো বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। এগুলো হল-
- এতে ক্যালসিয়াম ও আয়রন রয়েছে যা হার, দাত, ত্বক, চুল ও নখের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
- এ খেজুরে ৭৭ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা আমাদের শরীরে খাদ্যের বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের কাজ করার শক্তি যোগান দেয়।
- গর্ভকালীন পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য এবং রক্তক্ষরণ দূর করতে খেজুর অত্যন্ত উপকারী।
- ফুসফুস সুস্থ রাখতে অজয়া খেজুর অত্যন্ত কার্যকর।
- মুখগহ্বরের ক্যান্সার প্রতিরোধে এটি প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে
- গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত খেজুরের ব্যবহার নরমাল ডেলিভারিতে সাহায্য করে। এটি প্রসবকালীন সময়ে দ্রুত মাংসপেশীর সংকোচন ও প্রসারণ ঘটাতে সাহায্য করে।
- ফুসফুস ক্যান্সার ও গহবরের ক্যান্সার প্রতিরোধে।
- মূত্রনালীর ইনফেকশন দূর করে
- উচ্চমাত্রায় ক্যালোরি, শর্করা ও ফ্যাট সম্পূর্ণ হওয়ায় এটি ঠান্ডা জনিত সমস্যা, জড় ও শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
- পেটের যেকোনো সমস্যার সমাধানে এটি বেশ উপযোগী
- দীর্ঘদিন ধরে কাশি, কফ ও শুকনো কাশি বা অ্যাজ মাই বেশ উপকারী।
- দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- হজম ক্রিয়া সাহায্য করে
- লিভার ও পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও
- স্নায়বিক সমস্যা সমাধানে এটি কাজ করে।
পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা
আমাদের শরীরের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী এবং পুষ্টিগুণে সম্পূর্ণ ভরপুর একটি ফল। পুরুষদের যৌন জীবনকে ভালো রাখতে খেজুরের উপকারিতা অবিশ্বাস্য।শরীরের বিভিন্ন প্রকার দুর্বলতা দূর করতে ও পুরুষদের যৌন জীবনকে দীর্ঘায়িত করার ক্ষেত্রে খেজুর কিভাবে কাজ করে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
- পুরুষদের যৌনশক্তি বহুগুণ বৃদ্ধি করতে
- পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধি করতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া জরুরী
- সেক্স ড্রাইভ বাড়াতে সাহায্য করে
- অকাল বীর্যপাত রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও
- হার্টের সমস্যা দূর করে
- বন্ধ্যাত্ব দূর করতে
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
- ত্বকের বার্ধক্য নিয়ন্ত্রণে রাখে
- খেজুরের পুষ্টিগুণ শরীরের জন্য উপকারী
- দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী
- কিডনি ভালো রাখে
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
- রাতকানা রোগে উপকারী
- রক্তস্বল্পতা রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করে
- হার ও দাঁত মজবুত করে
- চুল ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে
- মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে
খুরমা খেজুরের উপকারিতা
সৌদি আরব, ইরাক, ইরান ও পাকিস্তানের সাধারণত খুরমা খেজুর হয়ে থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও খাদ্যগুণ সম্পন্ন। ভিটামিন সি ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, amino এসিড, ভিটামিন কে এবং প্রচুর পরিমাণে আইরন। খুরমা খেজুরের উপকারিতা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানুন-
- খুরমা খেজুর পদান্ত তারুণ্য ও যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এটি যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে এবং বীর্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ইউনানী চিকিৎসায় এটি শক্তিবর্ধক হালুয়া তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
- শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে খুরমা খেজুরের তুলনা অপরিসীম। খেজুরের প্রায় ৮০ভাগই চিনি যা সরাসরি আমাদের রক্তে মিশে যায়। একই কারণে খেজুর কে মরুভূমির গ্লুকোজ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
- মস্তিষ্ককে মানসিকভাবে শান্ত করতে এবং হৃদপিন্ডের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে রক্তচাপ কমিয়ে মানসিকভাবে স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে খেজুর অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- খাবারের রুচি বৃদ্ধি করতে এবং শরীরের সমস্ত পুষ্টিগুণ পূরণ করতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।
- হরমোনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে খেজুরে থাকা অ্যামাইনো এসিড ও টিপটোফেন কাজ করে। যা মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে।
- খেজুরের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ রয়েছে যেটি দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত কার্যকর।
- খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার থাকাই এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ও মিনারেল এ ভরপুর খেজুর আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ সাহায্য করে। এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে।
- ফুসফুস ও ক্যাভিটি ক্যান্সার এর মত ভয়ংকর ক্যান্সারসহ যাবতীয় ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে খেজুর।
- দেহকে সঠিকভাবে সুস্থ রাখতে খেজুর সাহায্য করে। খেজুরে স্বাভাবিক কোলেস্টেরল রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আইরন রয়েছে যেটি গর্ভবতী মা সহ সব বয়সের মানুষদের জন্য রক্তস্বল্পতা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। এটি রক্তস্বল্পতা ও ক্ষয় রোধ দূর করতে সাহায্য করে।
মরিয়ম খেজুরের উপকারিতা
বলা হয়ে থাকে," বছরে যতগুলো দিন, তার থেকে বেশি গুণ।" মরিয়ম খেজুর এতটাই গুণসম্পন্ন যে বছরের যতগুলো দিন রয়েছে তার থেকেও বেশি এর গুণ রয়েছে। প্রাকৃতিক ফাইবারের আধিক্য থাকার কারণে এর উপকারিতা ও গুরুত্ব অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সমস্ত শুকনা খাবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পলিফিরন সমৃদ্ধ খাবার হল মরিয়ম খেজুর। এটি বিভিন্ন প্রকার বিপদজনক বা মারাত্মক রোগ থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি করতে মরিয়ম খেজুর অত্যন্ত উপকারী। মরিয়ম খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরে সেরতোনির নামক হরমোন উৎপাদন করতে সাহায্য করে যেটি আমাদের মনকে প্রফুল্ল রাখতে এবং মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
- মুসলমানদের মধ্যে রমজান মাসে খেজুর খাওয়া খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা। তবে অনেকেই খেজুরের আসল উপকারিতা বা পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অজ্ঞত নয়। সারাদিন রোজা রাখার পর শরীরে গ্লুকোজের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে খালি পেটে খেজুর খাওয়া উত্তম। এটি শরীরের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজে দেয়।
- মরিয়ম খেজুরে থাকা আইরন রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতা দূর করতে খুব ভালো কাজে আসে।
- মরিয়ম খেজুরের বিদ্যমান ডায়েট্রি ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে।
- অ্যাজমা, কফ, শুকনো কাশি, পেটের সমস্যা ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে মরিয়ম খেজুরের তুলনা নেই।
- মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখতে মরিয়ম খেজুর অত্যন্ত কার্যকরী।
- শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে হার এবং দাঁতের মাড়ি মজবুত করে মরিয়ম খেজুর এ থাকা পুষ্টিগুণ।
- মরিয়ম খেজুরের বিদ্যমান পুষ্টির উপাদান শরীরের পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর।
- স্বাভাবিক দুর্বলতা দূর করতে মরিয়ম খেজুর এ থাকা বিদ্যমান ক্যালরি অত্যান্ত কার্যকর।
- মরিয়ম খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও অ্যামাইনো এসিড রয়েছে যা আমাদের হজম ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং বদহজম থেকে রক্ষা করে ।
- ভিটামিন এ অভিটামিন সি সমৃদ্ধ মরিয়ম খেজুর দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং শরীরে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে
- মরিয়ম খেজুরে কোন প্রকার অতিরিক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল থাকে না যার ফলে এটি স্বাস্থ্যকর
- খাবারের অরুচি দূর করতে মরিয়ম খেজুর বেশ উপকারী
- তারুণ্য ধরে রাখতে এবং স্কিনকে সুস্থ রাখতে খেজুরে থাকা নানা রকম পুষ্টি উপাদান বেশ উপকারী।
- পুরুষদের তারুণ্য বা যৌবন দীর্ঘস্থায়ী করতে। শুক্রানুর পরিমাণ বৃদ্ধি করতে ও ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে মরিয়ম খেজুর বিশেষ উপকারী।
কাঁচা খেজুরের উপকারিতা
শুকনো খেজুরের পাশাপাশি কাঁচা খেজুর ও আমাদের শরীরের জন্য অত্যান্ত উপকারী। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ এবং অন্যান্য উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে।
- এটি শরীরে এন্টি অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
- শরীরের মাইক্রোবিয়াল এর পরিমাণ বৃদ্ধি করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- বিভিন্ন প্রকার ব্যথা বা প্রদাহ দূর করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- মুত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
- হজম ক্রিয়া বৃদ্ধি করে।
- হার ও দাঁত কে মজবুত করে
- শরীরের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে
- দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। ইত্যাদি
শুকনো খেজুরের উপকারিতা
- আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালরি প্রদান করে। যা আমাদের কাজ করার ক্ষমতা যোগায়।
- পানিসূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
- হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- খেজুরের বিদ্যমান ক্যালসিয়াম হার ও দাঁতকে মজবুত করে। এবং ক্যালসিয়াম ঘাঁটিজনিত সমস্যা দূর করে।
- সোডিয়াম ও পটাশিয়াম এর ভারসাম্য রক্ষাতে খেজুরের তুলনা অপরিসীম।
- খেজুরের বিদ্যমান ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হজম ক্রিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- খেজুরে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনির নামক হরমোন উৎপাদন করে। যা আমাদের মানসিকভাবে প্রফুল্লতা প্রদান করে এবং মনকে ভালো রাখে।
- স্বাভাবিক দুর্বলতা দূর করতে খেজুর অত্যন্ত কার্যকর।
- খাবারের অরুচি দূর করে।
- খেজুরের বিদ্যমান ভিটামিনসমূহ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যা শরীরে ভিটামিন এর চাহিদা পূরণ করে এবং ভিটামিন জনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
- খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
- শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খেজুরের তুলনা নেই।
- রক্ত শুন্যতা দূর করতে খেজুরে থাকা আইরন বিশেষভাবে কাজ করে।
- পুরুষদের পুরুষত্ব ও যৌবন ধরে রাখতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
আজওয়া খেজুরের উপকারিতা হাদিস
ছোট ছোট কালো রঙের আস্তরণ সমৃদ্ধ জামের মতো শুকনো এই খেজুর গুলোই মূলত আজো খেজুর। অত্যন্ত মানসম্পন্ন, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু এই খেজুরটি মদিনায় উৎকৃষ্ট খেজুর হিসেবে পরিচিত। অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ও ঔষধি গুণসম্পন্ন হওয়ায় এটি অন্যান্য খেজুরের তুলনায় দামেও কিছুটা উর্ধ্বগামী। বিভিন্ন হাদিসে আজওয়া খেজুরের গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে এবং এটিকে জান্নাতের ফল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আজওয়া খেজুর সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে। চলুন সেগুলো কি কি জেনে নেওয়া যাক।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত-
রাসূল(সাঃ) বলেছেন-" আজওয়া খেজুর জান্নাতের, এতে বিষক্রিয়ার প্রতিষেধক রয়েছে..."(তিরমিজি, হাদিসঃ ২০৬৬)
আজওয়া খেজুর রাসূল(সাঃ) এর প্রিয় ফল। গুরুত্ব ও পুষ্টিকর উপকারিতার দিক দিয়ে এটি অন্যতম।রাসূল(সাঃ) বলেছেন-" যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিশ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না"(বুখারী, হাদিসঃ৫৪৪৫)
অপর একটি হাদিসে এসেছে। আজোয়া খেজুর হৃদরোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী।রাসূল(সাঃ) তার এক সাহাবীকে হৃদরোগের জন্য আজওয়া খেজুরের তৈরি ঔষধ খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।
সাদ(রাঃ) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন-আমি রাসূল(সাঃ) কে বলতে শুনেছি-" যে ব্যক্তি ভোরে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু টোনা তার ক্ষতি করতে পারবে না।"(বুখারী, হাদিসঃ৫৪৪৫-৫৭৬৮; মুসলিম, হাদিস(২০৪৭) আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৮৭৬)
আলী রাদিয়াল্লাহু বলেছেন," যে ব্যক্তি আজোয়া খেজুর প্রতিদিন আহার করে, তার পাকস্থলীর প্রত্যেকটি রোগ নির্মূল হয়ে যায়"(কানজুল উম্মাল, হাদিসঃ ২৮৪৭২)
আয়েশা(রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল(সাঃ) বলেন," আল আলিয়ার আজওয়া খেজুর খেয়েই সকালের উপবাস প্রথমে ভাঙলে তা জাদু অথবা বিষক্রিয়ার আরোগ্য হিসেবে কাজ করে।"(মুসনাদে আহমাদ, হাদিসঃ ২৩৫৯২)
শেষ কথা
উপরের আলোচনা অনুযায়ী আপনি নিশ্চয়ই খেজুরের উপকারিতা এবং আজওয়া খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই পর্যায়ে আপনি যদি কিছু জানতে পারেন এবং উপকার পেয়ে থাকেন তবে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দেবেন।